Wap4dollar.com

Thursday 29 June 2017

সহবাস সম্পর্কিত কিছু করণীয় :


সহবাসকালে কিছু করণীয় রয়েছে, যা পালন করা প্রত্যেক নারী- পুরুষের জন্য কর্তব্য।

(১) সহবাসকালে দো‘আ পাঠ করা : সহবাসের
সময়
রাসূল (ছাঃ) নিম্নোক্ত দো‘আ পাঠ করতে
বলেছেন, ﺑِﺴْﻢِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺟَﻨِّﺒْﻨَﺎ ﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥَ ﻭَﺟَﻨِّﺐِ ﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥَ ﻣَﺎ
ﺭَﺯَﻗْﺘَﻨَﺎ - উচ্চারণ : ‘বিসমিল্লা-হি আল্লা-হুম্মা
জান্নিবনাশ
শায়তা-না ও জান্নিবিশ শায়তানা মা
রাযাকতানা’। অর্থ:
‘আল্লাহর নামে শুরু করছি। হে আল্লাহ!
আমাদেরকে শয়তানের প্রভাব থেকে দূরে
রাখুন এবং আমাদের যে সন্তান দান করবেন
তাদেরকে শয়তানের প্রভাব থেকে বাঁচিয়ে
রাখুন’।[1] এ দো‘আ পাঠ করার পরে সহবাস করলে
আল্লাহ যদি ঐ স্বামী-স্ত্রীকে কোন সন্তান
দান করেন, তাহ’লে শয়তান সন্তানের কোন
ক্ষতি করতে পারবে না।[2]
সহবাসের ক্ষেত্রে স্বামী স্ত্রীর
সম্মুখভাগে যে দিক দিয়ে ইচ্ছা সহবাস করতে
পারে। আল্লাহ বলেন, ﻧِﺴَﺎﺅُﻛُﻢْ ﺣَﺮْﺙٌ ﻟَﻜُﻢْ ﻓَﺄْﺗُﻮْﺍ ﺣَﺮْﺛَﻜُﻢْ ﺃَﻧَّﻰ
ﺷِﺌْﺘُﻢْ ‘তোমাদের স্ত্রীগণ তোমাদের জন্য
শস্যক্ষেত স্বরূপ। অতএব তোমরা তোমাদের
শস্যক্ষেত্রে যেভাবে ইচ্ছা আগমন
কর’ (বাক্বারাহ ২/২২৩)।
উম্মু সালামা (রাঃ) বলেন, মুহাজিরগণ
মদীনায় এসে
আনছার মহিলাদের বিবাহ করলেন। মুহাজির
মহিলারা চিৎ
হয়ে শয়ন করত। কিন্তু আনছার মহিলারা চিৎ হয়ে
শয়ন করত না। একদা এক মুহাজির ব্যক্তি তার
আনছার
স্ত্রীকে এরূপ করার ইচ্ছা করলে সে রাসূল
(ছাঃ)-
কে জিজ্ঞেস না করে তা করতে অস্বীকৃতি
জানাল। উম্মু সালামা (রাঃ) বলেন, সে
মহিলা রাসূল (ছাঃ)-
এর নিকট আসল, কিন্তু তাঁকে জিজ্ঞেস করতে
লজ্জাবোধ করল। তাই উম্মু সালামা (রাঃ)
তাঁকে
জিজ্ঞেস করলেন। অতঃপর ﻧِﺴَﺎﺅُﻛُﻢْ ﺣَﺮْﺙٌ ﻟَﻜُﻢْ ﻓَﺄْﺗُﻮْﺍ ﺣَﺮْﺛَﻜُﻢْ
ﺃَﻧَّﻰ ﺷِﺌْﺘُﻢْ ‘তোমাদের স্ত্রীগণ তোমাদের জন্য
শস্যক্ষেত স্বরূপ। অতএব তোমরা তোমাদের
শস্যক্ষেত্রে যেভাবে ইচ্ছা আগমন
কর’ (বাক্বারাহ ২/২২৩) আয়াতটি অবতীর্ণ হয়।
রাসূল
(ছাঃ) বললেন, না, শুধুমাত্র একই রাস্তায়
সহবাস করা
যাবে’।[3] অন্যত্র রাসূল (ছাঃ) বলেন, ﺍﺋْﺘِﻬَﺎ ﻣُﻘْﺒِﻠَﺔً،
ﻭَﻣُﺪْﺑِﺮَﺓً
ﺇِﺫَﺍ ﻛَﺎﻥَ ﺫَﻟِﻚَ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻔَﺮْﺝِ - ‘তার নিকটে আস, সম্মুখ ও পিছন
উভয় দিক দিয়ে, যদি তা লজ্জাস্থান হয়’।[4] তিনি
আরো বলেন, ﺃَﻗْﺒِﻞْ ﻭَﺃَﺩْﺑِﺮْ ﻭَﺍﺗَّﻖِ ﺍﻟﺪُّﺑُﺮَ ﻭَﺍﻟْﺤِﻴْﻀَﺔَ . ‘সামনে
কর, পিছনে কর এবং পায়ুপথ ও ঋতুস্রাব থেকে
বেঁচে থাক’।[5]
(২) নিষিদ্ধ স্থানে সহবাস না করা : স্ত্রীর
পায়ুপথে
সহবাস করা নিষিদ্ধ। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ﻻَ ﻳَﻨْﻈُﺮُ
ﺍﻟﻠﻪُ ﺇِﻟَﻰ ﺭَﺟُﻞٍ
ﻳَﺄْﺗِﻲ ﺍﻣْﺮﺃَﺗَﻪُ ﻓِﻲْ ﺩُﺑُﺮِﻫَﺎ - ‘আল্লাহ ঐ ব্যক্তির দিকে
তাকাবেন না যে তার স্ত্রীর পায়ুপথে সহবাস
করে’।[6] তিনি আরো বলেন, ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠﻪَ ﻻَ ﻳَﺴْﺘَﺤْﻴِﻰ ﻣِﻦَ
ﺍﻟْﺤَﻖِّ . ﺛَﻼَﺙَ ﻣَﺮَّﺍﺕٍ، ﻻَ ﺗَﺄْﺗُﻮﺍ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀَ ﻓِﻰ ﺃَﺩْﺑَﺎﺭِﻫِﻦَّ . ‘নিশ্চয়ই
আল্লাহ
হকের ব্যাপারে লজ্জাবোধ করেন না। কথাটি
তিনি
তিনবার বলেছেন। তোমরা মহিলাদের পায়ুপথে
সহবাস কর না’।[7]
মহিলাদের পায়ুপথ ব্যবহার করাকে হারাম করা
হয়েছে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ﺇِﺗْﻴَﺎﻥُ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀِ ﻓِﻰْ ﺃَﺩْﺑَﺎﺭِﻫِﻦَّ ﺣَﺮَﺍﻡٌ
‘নারীদের পিছন দিয়ে সহবাস করা হরাম’।[8]
অন্যত্র তিনি বলেন, ﺇﻥَّ ﺍﻟﻠﻪَ ﻳَﻨْﻬَﺎﻛُﻢْ ﺃَﻥْ ﺗَﺄْﺗُﻮﺍ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀَ ﻓِﻲْ ﺃَﺩْﺑَﺎﺭِﻫِﻦَّ
- ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ
করেছেন তোমাদের স্ত্রীদের পায়ুপথ
ব্যবহার করতে’।[9]
(৩) নিষিদ্ধ সময়ে সহবাস না করা : ঋতু অবস্থায়
স্ত্রীর সাথে সহবাস করা হারাম। আল্লাহ
বলেন,
ﻭَﻳَﺴْﺄَﻝُﻭﻧَﻚَ ﻋَﻦِ ﺍﻟْﻤَﺤِﻴْﺾِ ﻗُﻞْ ﻫُﻮَ ﺃَﺫًﻯ ﻓَﺎﻋْﺘَﺰِﻟُﻮﺍ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀَ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻤَﺤِﻴْﺾِ ﻭَﻻَ
ﺗَﻘْﺮَﺑُﻮْﻫُﻦَّ ﺣَﺘَّﻰ ﻳَﻄْﻬُﺮْﻥَ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺗَﻄَﻬَّﺮْﻥَ ﻓَﺄْﺗُﻮْﻫُﻦَّ ﻣِﻦْ ﺣَﻴْﺚُ ﺃَﻣَﺮَﻛُﻢُ ﺍﻟﻠﻪُ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠﻪَ
ﻳُﺤِﺐُّ ﺍﻟﺘَّﻮَّﺍﺑِﻴْﻦَ ﻭَﻳُﺤِﺐُّ ﺍﻟْﻤُﺘَﻄَﻬِّﺮِﻱ ْﻥَ - ‘আর লোকেরা
তোমাকে প্রশ্ন করছে মহিলাদের ঋতুস্রাব
সম্পর্কে। তুমি বল, ওটা হ’ল কষ্টদায়ক বস্ত্ত।
অতএব ঋতুকালে স্ত্রীসঙ্গ হ’তে বিরত থাক।
পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত তাদের নিকটবর্তী হয়ো
না। অতঃপর যখন তারা ভালভাবে পবিত্র হবে,
তখন
আল্লাহর নির্দেশ মতে তোমরা তাদের নিকট
গমন কর। নিশ্চয় আল্লাহ তওবাকারীদের
ভালবাসেন ও পবিত্রতা অর্জনকারীদের
ভালবাসেন’ (বাক্বারাহ ২/২২২)।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ﻣَﻦْ ﺃَﺗَﻰ ﺣَﺎﺋِﻀًﺎ ﺃَﻭِ ﺍﻣْﺮَﺃَﺓً ﻓِﻰْ
ﺩُﺑُﺮِﻫَﺎ ﺃَﻭْ
ﻛَﺎﻫِﻨًﺎ ﻓَﺼَﺪَّﻗَﻪُ ﺑِﻤَﺎ ﻳَﻘُﻮْﻝُ ﻓَﻘَﺪْ ﻛَﻔَﺮَ ﺑِﻤَﺎ ﺃُﻧْﺰِﻝَ ﻋَﻠَﻰ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ - ‘যে ব্যক্তি
কোন ঋতুবতী স্ত্রীর সাথে কিংবা তার
পায়ুপথে সঙ্গম করে অথবা গণকের কাছে যায়
এবং
তার কথা বিশ্বাস করে, সে মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর
প্রতি যা
অবতীর্ণ হয়েছে তা অস্বীকার করল’।[10]
উল্লেখ্য, ঋতুবতী স্ত্রীর সাথে সহবাস
ব্যতীত সবকিছু বৈধ। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ﺟَﺎﻣِﻌُﻮْﻩَّﻥُ
ﻓِﻰ
ﺍﻟْﺒُﻴُﻮْﺕِ ﻭَﺍﺻْﻨَﻌُﻮْﺍ ﻛُﻞَّ ﺷَﻰْﺀٍ ﻏَﻴْﺮَ ﺍﻟﻨِّﻜَﺎﺡِ - ‘তোমরা তাদের
সাথে (তাদের হায়েয অবস্থায়) একই ঘরে
অবস্থান ও অন্যান্য কাজ করতে পার শুধু সহবাস
ছাড়া’।
[11]
আয়েশা (রাঃ) বলেন, আমাদের কেউ হায়েয
অবস্থায় থাকলে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) তার
সাথে
মিশামিশি করতে চাইলে তাকে হায়েযে
শক্তভাবে ইযার পরার নির্দেশ দিতেন। তারপর
তার
সাথে মিশামিশি করতেন’।[12] অন্য বর্ণনায় আছে,
ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻰَّ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻛَﺎﻥَ ﺇِﺫَﺍ ﺃَﺭَﺍﺩَ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﺤَﺎﺋِﺾِ ﺷَﻴْﺌًﺎ ﺃَﻟْﻘَﻰ ﻋَﻠَﻰ
ﻓَﺮْﺟِﻬَﺎ ﺛَﻮْﺑًﺎ . ‘নবী করীম (ছাঃ) তাঁর ঋতুবতী
স্ত্রীর সাথে কিছু করতে চাইলে স্ত্রীর
লজ্জাস্থানের উপর কাপড় রেখে তারপর
করতেন’।[13]
স্ত্রী হায়েয থেকে পবিত্র হ’লে তার সাথে
সহবাস করা বৈধ। আল্লাহ বলেন, ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺗَﻄَﻬَّﺮْﻥَ ﻓَﺄْﺗُﻮْﻫُﻦَّ
ﻣِﻦْ
ﺣَﻴْﺚُ ﺃَﻣَﺮَﻛُﻢُ ﺍﻟﻠﻪُ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠﻪَ ﻳُﺤِﺐُّ ﺍﻟﺘَّﻮَّﺍﺑِﻴْﻦَ ﻭَﻳُﺤِﺐُّ ﺍﻟْﻤُﺘَﻄَﻬِّﺮِﻱ ْﻥَ- ‘অতঃপর
যখন তারা ভালভাবে পবিত্র হবে, তখন
আল্লাহর
নির্দেশ মতে তোমরা তাদের নিকট গমন কর।
নিশ্চয় আল্লাহ তওবাকারীদের ভালবাসেন ও
পবিত্রতা অর্জনকারীদের
ভালবাসেন’ (বাক্বারাহ
২/২২২)।
ঋতুকালে স্ত্রীর সাথে সহবাস করলে
কাফফারা
দিতে হবে। নবী করীম (ছাঃ) এমন ব্যক্তি
সম্পর্কে বলেন, ﺍﻟَّﺬِﻱْ ﻳَﺄْﺗِﻲْ ﺍﻣْﺮَﺃَﺗَﻪُ ﻭَﻫِﻰَ ﺣَﺎﺋِﺾٌ ﻗَﺎﻝَ ﻳَﺘَﺼَﺪَّﻕُ
ﺑِﺪِﻳْﻨَﺎﺭٍ ﺃَﻭْ ﻧِﺼْﻒِ ﺩِﻳْﻨَﺎﺭٍ - ‘যে ব্যক্তি ঋতুবতী স্ত্রীর
সাথে সহবাস করে, সে যেন এক অথবা অর্ধ
দীনার ছাদাকা করে’।[14]
উল্লেখ্য যে, ১ ভরি সমান ১১.৬৬ গ্রাম। হাদীছে
বর্ণিত এক দীনার সমান ৪.২৫ গ্রাম স্বর্ণ। আর
অর্ধ দীনার সমান ২.১২৫ গ্রাম স্বর্ণ।
(৪) সহবাসের পর ওযূ করা : সহবাসের পরে
ঘুমাতে ও পানাহার করতে চাইলে কিংবা
পুনরায় মিলিত
হ’তে চাইলে মাঝে ওযূ করা সুন্নাত।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)
বলেন, ﺛَﻼَﺛَﺔٌ ﻻَ ﺗَﻘْﺮَﺑُﻬُﻢُ ﺍﻟْﻤَﻼَﺋِﻜَﺔُ ﺟِﻴْﻔَﺔُ ﺍﻟْﻜَﺎﻓِﺮِ ﻭَﺍﻟْﻤُﺘَﻀَﻤِّﺦُ ﺑِﺎﻟْﺨَﻠُﻮْﻕِ
ﻭَﺍﻟْﺠُﻨُﺐُ ﺇِﻻَّ ﺃَﻥْ ﻳَﺘَﻮَﺿَّﺄ -َ ‘তিন ব্যক্তির কাছে ফেরেশতা
আসে না; কাফের ব্যক্তির লাশ, জাফরান
ব্যবহারকারী এবং অপবিত্র ব্যক্তি যতক্ষণ না
সে ওযূ
করে’।[15]
আয়েশা (রাঃ) বলেন, ﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻰُّ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺇِﺫَﺍ
ﺃَﺭَﺍﺩَ
ﺃَﻥْ ﻳَﻨَﺎﻡَ ﻭَﻫْﻮَ ﺟُﻨُﺐٌ، ﻏَﺴَﻞَ ﻓَﺮْﺟَﻪُ، ﻭَﺗَﻮَﺿَّﺄَ ﻟِﻠﺼَّﻼَﺓِ . ‘নবী করীম
(ছাঃ) যখন অপবিত্র অবস্থায় ঘুমাতে ইচ্ছা
করতেন
তখন তিনি লজ্জাস্থান ধুয়ে ছালাতের ওযূর
ন্যায় ওযূ
করতেন’।[16]
আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর বলেন, ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব
(রাঃ) আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)-কে বললেন, যদি
রাতে
কোন সময় তাঁর গোসল ফরয হয় (তখন কী
করতে হবে?) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাঁকে বললেন,
ওযূ
করবে, লজ্জাস্থান ধুয়ে নিবে তারপর ঘুমাবে।[17]
অন্যত্র তিনি বলেন, ﻧَﻌَﻢْ ﻟِﻴَﺘَﻮَﺿَّﺄْ ﺛُﻢَّ ﻟْﻴَﻨَﻢْ ﺣَﺘَّﻰ ﻳَﻐْﺘَﺴِﻞَ ﺇِﺫَﺍ ﺷَﺎﺀَ
‘হ্যাঁ সে যেন ওযূ করে। অতঃপর সে যেন ঘুমায়
এবং যখন চাইবে গোসল করবে’।[18] তিনি
আরো বলেন, ﻧَﻌَﻢْ ﻭَﻳَﺘَﻮَﺿَّﺄُ ﺇِﻥْ ﺷَﺎﺀَ ‘হ্যাঁ, যদি সে চায় ওযূ
করবে’।[19] উপরোক্ত হাদীছ সমূহ দ্বারা
প্রতীয়মান হয় যে, সহবাসের পরে ওযূ করা
আবশ্যিক নয় বরং সুন্নাত। যেমন আয়েশা (রাঃ)
বলেন, ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳَﻨَﺎﻡُ ﻭَﻫُﻮَ ﺟُﻨُﺐٌ ﻣِﻦْ
ﻏَﻴْﺮِ ﺃَﻥْ ﻳَﻤَﺲَّ ﻣَﺎﺀً . ‘রাসূলুল্লাহ কোনরূপ পানি স্পর্শ
না
করেই নাপাক অবস্থায় ঘুমাতেন’।[20]
উল্লেখ্য, ওযূর পরিবর্তে তায়াম্মুম করাও যায়।
আয়েশা (রাঃ) বলেন, ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ
ﺇِﺫَﺍ
ﺃَﺟْﻨَﺐَ ﻓَﺄَﺭَﺍﺩَ ﺃَﻥْ ﻳَﻨَﺎﻡَ ﺗَﻮَﺿَّﺄَ ﺃﻭ ﺗَﻴَﻤَّﻢَ - ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)
যখন
অপবিত্র হ’তেন এবং ঘুমানোর ইচ্ছা করতেন তখন
ওযূ করতেন বা তায়াম্মুম করতেন’।[21]
(৫) ঘুমের পূর্বে অপবিত্রতার গোসল করা উত্তম
: নিম্নোক্ত হাদীছ থেকে প্রতীয়মান হয়
যে, জানাবাতের পরে গোসল করা উত্তম।
আব্দুল্লাহ বিন কায়েস বলেন, আমি আয়েশা
(রাঃ)-
কে জিজ্ঞেস করলাম, নবী করীম (ছাঃ) অপবিত্র
অবস্থায় কিরূপ করতেন? তিনি কি ঘুমের পূর্বে
গোসল করতেন, না গোসলের পূর্বে
ঘুমাতেন? আয়েশা (রাঃ) বলেন, ﻛُﻞُّ ﺫَﻟِﻚَ ﻗَﺪْ ﻛَﺎﻥَ ﻳَﻔْﻌَﻞُ
ﺭُﺑَّﻤَﺎ
ﺍﻏْﺘَﺴَﻞَ ﻓَﻨَﺎﻡَ ﻭَﺭُﺑَّﻤَﺎ ﺗَﻮَﺿَّﺄَ ﻓَﻨَﺎﻡَ . ﻗُﻠْﺖُ ﺍﻟْﺤَﻤْﺪُ ﻟِﻠَّﻪِ ﺍﻟَّﺬِﻯ ﺟَﻌَﻞَ ﻓِﻰ ﺍﻷَﻣْﺮِ
ﺳَﻌَﺔً . ‘তিনি উভয়টি করতেন। কখনো গোসল
করে ঘুমাতেন, আবার কখনো ওযূ করে
ঘুমাতেন। আমি বললাম, সমস্ত প্রশংসা একমাত্র
আল্লাহর যিনি কর্মে প্রশস্ততা দান করেছেন’।
[22]
অন্য হাদীছে এসেছে, ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ
ﻃَﺎﻑَ ﺫَﺍﺕَ ﻳَﻮْﻡٍ ﻋَﻠَﻰ ﻧِﺴَﺎﺋِﻪِ ﻳَﻐْﺘَﺴِﻞُ ﻋِﻨْﺪَ ﻫَﺬِﻩِ ﻭَﻋِﻨْﺪَ ﻫَﺬِﻩِ ﻓَﻘُﻠْﺖُ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ
ﺍﻟﻠﻪِ ﺃَﻻَ ﺗَﺠْﻌَﻠُﻪُ ﻏُﺴْﻼً ﻭَﺍﺣِﺪًﺍ؟ ﻗَﺎﻝَ : ﻫَﺬَﺍ ﺃَﺯْﻛَﻰ ﻭَﺃَﻃْﻬَﺮُ ﻭَﺃَﻃْﻴَﺐُ .‘একদ
া নবী করীম (ছাঃ) তাঁর স্ত্রীদের সাথে
সহবাস
করলেন। তিনি এর কাছে গোসল করলেন এবং ওর
কাছেও গোসল করলেন। রাবী বলেন, আমি
তাঁকে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি
তাকে
একটি গোসলে পরিণত করতে পারলেন না? তিনি
বললেন, এটা অধিকতর পরিচ্ছন্ন, অতি উত্তম ও
সর্বাধিক পবিত্রতা’।[23]
(৬) স্বামী-স্ত্রী এক সাথে গোসল করা :
স্বামী-স্ত্রীর একস্থানে একত্রে গোসল
করা বৈধ। আয়েশা (রাঃ) বলেন, ﻛُﻨْﺖُ ﺃَﻏْﺘَﺴِﻞُ ﺃَﻧَﺎ ﻭَﺭَﺳُﻮْﻝُ
ﺍﻟﻠﻪِ
ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻣِﻦْ ﺇِﻧَﺎﺀٍ ﺑَﻴْﻨِﻰْ ﻭَﺑَﻴْﻨَﻪُ ﻭَﺍﺣِﺪٍ ﻓَﻴُﺒَﺎﺩِﺭُﻧِﻰْ ﺣَﺘَّﻰ ﺃَﻗُﻮﻝَ ﺩَﻉْ
ﻟِﻰْ ﺩَﻉْ ﻟِﻰْ . ﻗَﺎﻟَﺖْ ﻭَﻫُﻤَﺎ ﺟُﻨُﺒَﺎﻥِ . ‘আমি ও আল্লাহর রাসূল
(ছাঃ)
উভয়েই একই পাত্র থেকে গোসল করতে
ছিলাম। এমনকি আমি বলতাম আমার জন্য রাখেন,
আমার জন্য রাখেন। আয়েশা (রাঃ) বলেন, উভয়
অপবিত্র অবস্থায় ছিলেন’।[24]


[1]. বুখারী হা/১৪১, ৩২৭১, ৫১৬৫; মুসলিম
হা/১৪৩৪;
আহমাদ হা/১৯০৮, বুলূগুল মারাম হা/১০২০।
[2]. বুখারী হা/১৪১, ৩২৭১; মুসলিম হা/১৪৩৪;
মিশকাত
হা/২৪১৬।
[3]. আহমাদ, ইরওয়া ৭/৬১; আদাবুয যিফাফ পৃঃ
৩০।
[4]. ত্বাবারাণী, কাবীর, ইরওয়া ৭/৬২;
আদাবুয যিফাফ,
পৃঃ ২৭।
[5]. তিরমিযী হা/২৯৮০; মিশকাত হা/৩১৯১, সনদ
হাসান।
[6]. ইবনু মাজাহ হা/৬৩৯; মিশকাত হা/৩৫৮৫;
সিলসিলা
ছহীহাহ হা/৩৩৭৮ আলোচনা দ্রঃ; ছহীহুল
জামে‘
হা/৭৮০২।
[7]. ইবনু মাজাহ হা/১৯২৪; মিশকাত হা/৩১৯২;
ছহীহাহ
হা/৩৩৭৭।
[8]. নাসাঈ, সুনানুল কুবরা, ছহীহাহ হা/৮৭৩;
ছহীহুল
জামে‘ হা/১২৬।
[9]. ছহীহুল জামে‘ হা/১৯২১।
[10]. ইবনু মাজাহ হা/৬৩৯; তিরমিযী হা/১৩৫;
মিশকাত
হা/৫৫১, হাদীছ ছহীহ।
[11]. আবুদাউদ হা/২৫৮, ২১৬৫, সনদ ছহীহ।
[12]. বুখারী হা/৩০২; মুসলিম হা/২৯৩।
[13]. আবুদাউদ হা/২৭২; ছহীহুল জামে‘
হা/৪৬৬৩।
[14]. আবুদাঊদ হা/২৬৪; মুসনাদে আহমাদ
হা/২১২১;
সনদ ছহীহ।
[15]. আবুদাউদ হা/৪১৮০; ছহীহ আত-তারগীব
হা/১৭৩, সনদ হাসান।
[16]. বুখারী হা/২৮৮।
[17]. বুখারী হা/২৯০; মুসলিম হা/৩০৬; মিশকাত
হা/৪৫২।
[18]. মুসলিম হা/৩০৬; আদাবুয যিফাফ, পৃঃ ৪২।
[19]. ইবনু হিববান হা/১২১৬; আদাবুয যিফাফ, পৃঃ
৪২।
[20]. আবূদাঊদ হা/২৮৮; তিরমিযী হা/১১৮
‘পবিত্রতা’
অধ্যায়; ইবনু মাজাহ হা/৫৮৪ ‘পবিত্রতা’
অধ্যায়, সনদ
ছহীহ।
[21]. বায়হাক্বী, আস-সুনানুল কুবরা, হা/৯৬৮;
আদাবুয
যিফাফ, পৃঃ ৪৫।
[22]. মুসলিম হা/৩০৭, ‘অপবিত্র ব্যক্তির ঘুমানো
জায়েয’ অনুচ্ছেদ; আবুদাউদ হা/১২৯১; তিরমিযী
হা/৪৪৯।
[23]. আবূদাঊদ হা/২১৯; মিশকাত হা/৪৭০, সনদ
হাসান।
[24]. মুসলিম হা/৩২১; মিশকাত হা/৪৪০।

Wednesday 28 June 2017

বিবাহের কতিপয় সুন্নত সমূহঃ


(১) মাসনূন বিবাহ সাদা সিধে ও অনাড়ম্বর
হবে, যা অপচয়, অপব্যয়, বেপর্দা ও বিজাতীয়
সংস্কৃতি মুক্ত হবে এবং তাতে যৌতুকের
শর্ত বা সামর্থের অধিক মহরানার শর্ত
থাকবেনা। (তাবারানী আউসাত, হাদিস
নং- ৩৬১২)
.
(২) সৎ ও খোদাভীরু পাত্র-পাত্রীর সন্ধান
করে বিবাহের পূর্বে পয়গাম পাঠানো। কোন
বাহানা বা সুযোগে পাত্রী দেখা সম্ভব
হলে, দেখে নেয়া মুস্তাহাব। কিন্তু
আনুষ্ঠানিকভাবে ঘটা করে পাত্রী
দেখানোর যে প্রথা আমাদের সমাজে
প্রচলিত তা সুন্নতের পরিপন্থী ও
পরিত্যাজ্য। (বুখারী হাদিস নং-৫০৯০,
ইমদাদুল ফাতাওয়া-৪: ২০০)
.
(৩) শাউয়াল মাসে এবং জুমুয়ার দিনে
মসজিদে বিবাহ সম্পাদন করা। উল্লেখ্য, সকল
মাসের যে কোন দিন বিবাহ করা যায়িজ
আছে। (মুসলিম ১৪২৩/ বায়হাকী ১৪৬৯৯)
.
(৪) বিবাহের খবর ব্যাপকভাবে প্রচার করে
বিবাহ করা এবং বিবাহের পরে আকদ
অনুষ্ঠানে উপস্থিত লোকদের মাঝে খেজুর
বন্টন করা। (বুখারী/৫১৪৭)
.
(৫) সামর্থানুযায়ী মোহর ধার্য করা। (আবু
দাউদ/২১০৬)
.
(৬) বাসর রাতে স্ত্রীর কপালের উপরের চুল
হাতে নিয়ে এই দোয়া পড়াঃ
“আল্লাহুম্মা ইন্নি আস আলুকা খয়রাহা ওয়া
খয়রা মা জাবালতুহা আলাইহি
ওয়াওযুবিকা মিন শার্রিহা মিন শার্রিমা
জাবালতাহা আলাইহি” (আবু দাউদ/২১৬০)
.
(৭) স্ত্রীর সঙ্গে প্রথমে অন্তরঙ্গতা সৃষ্টি
করবে, তার পর যখনই সহবাস এর ইচ্ছা হয়, তখন
প্রথমে নিম্নোক্ত দু’আ পড়ে নিবেঃ
“বিসমিল্লাহ্। আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ
শায়তান ও জান্নিবিশ শায়তানা মা
রাযাকতানা।” (মুসলিম/১৪৩৪)
(উপরোক্ত দোয়া না পড়লে শয়তানের
তাছীরে বাচ্চার উপর কু-প্রভাব পড়ে।
অতঃপর সন্তান বড় হলে, তার মধ্যে ধীরে
ধীরে তা প্রকাশ পেতে থাকে এবং
বাচ্চা নাফরমান ও অবাধ্য হয়। সুতরাং
পিতা মাতাকে খুবই শতর্ক থাকা জরুরী)
.
(৮) বাসর রাতের পর স্বীয় আত্মীয় স্বজন, বন্ধু-
বান্ধব, শুভাকাংখী এবং গরীব
মিসকীনদের তাউফীক অনুযায়ী ওলীমা
খাওয়ানোর আয়োজন করা (মুসলিম/১৪২৭)
.
(৯) কোন পক্ষ যেওরের শর্ত করা নিষেধ এবং
ছেলের পক্ষ থেকে যৌতুক চাওয়া হারাম
(আহসানুল ফাতাওয়া ৫/১৩)
.
(১০) কনের ইযন এর জন্য স্বাক্ষীর কোন প্রয়োজন
নাই। সুতরাং ছেলের পক্ষের লোক ইযন শুনতে
যাওয়া অনর্থক এবং বেপর্দা। সুতরাং তা
নিষেধ। মেয়ের কোন মাহরুম বিবাহের এবং
উকীল হওয়ার অনুমতি নিবে। (মুসলিম/১৪২১)
.
(১১) শর্ত আরোপ করে বর যাত্রীর নামে বরের
সাথে অধিক সংখ্যাক লোকজন নিয়ে
যাওয়া এবং কনের বাড়ীতে মেহমান হয়ে
কনের পিতার উপর বোঝা সৃষ্টি করা
আজকের সমাজের একটি জঘন্য কু-প্রথা, যা
সম্পূর্ন রুপে পরিত্যাগ করা আবশ্যক। (মুসনাদে
আহমাদ/২০৭২২, বুখারী/২৬৯৭)
.
(১২) ওলীমায় অতিরিক্ত ব্যয় করা কিংবা খুব
উচু মানের খানার ব্যবস্থা করা জরুরী নয়।
বরং সামর্থানুযায়ী খরচ করাই সুন্নত আদায়ের
জন্য যথেষ্ট। যে ওলীমায় শুধু ধনী ও
দুনিয়াদার লোকদের দাওয়াত দেওয়া হয়,
দ্বীনদার ও গরীব গরীব-মিসকিনদের
দাওয়াত দেওয়া হয়না, সে ওলীমাকে
হাদিসে নিকৃষ্টতম ওলীমা বলে আখ্যায়িত
করা হয়েছে। সুতরাং এ ধরনের ওলীমা
আয়োজন থেকে বিরত থাকা উচিত (আবু
দাউদ /৩৭৫৪)
.
আল্লাহ আমাদের সবাইকে সুন্নত মোতাবেক
বিবাহ করার তৌফিক দান করুন। আমীন।
(Collected)

★★★ মহান আল্লাহ রিজিকদাতা হলে না খেয়ে মানুষ মারা যায় কেন?


মহান আল্লাহ তায়ালার ৯৯টি গুণবাচক নাম রয়েছে। তার মধ্যে আল্লাহ ‘রিজিকদাতা’ অন্যতম। অর্থ্যাত কার রিজিক কোথায় আছে, রিজিকে কি আছে তা মহান আল্লাহ পাকই ঠিক করে দেন।


কিন্তু পিস টিভি বাংলার নিয়মিত আয়োজন প্রশ্নোত্তর পর্বে বর্তমান সময়ে বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবীদ ডা. জাকির নায়েকের কাছে এক একজন দর্শক জানতে চান,‘আল্লাহ যদি রিজিকদাতা হন, তাহলে পৃথিবীতে মানুষ না খেয়ে মারা যায় কেন? ওই ব্যক্তি সোমালিয়া, ইথোপিয়ার মানুষদের উদাহরণ দেন।


উত্তরে ডা. জাকির নায়েক বলেন, আমাদের পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে ‘আল্লাহ রিজিকদাতা’ এবং তিনি রক্ষাকারীও। আবার আল কোরআনের অন্য একটি আয়াতে আল্লাহ পাক বলছেন, ‘আমি মানুষকে পরীক্ষা করি সম্পদের অভাব




দিয়ে, বিভিন্ন রকম বিপর্যয় দিয়ে। যেমন তিনি আমাদের দুর্ভিক্ষ দিয়ে পরীক্ষা করেন, বন্যা দিয়ে পরীক্ষা করেন। আর এর মাধ্যমে দেখতে চান সত্যিকারের বিশ্বাসী কে? তিনি পরীক্ষা করেন তোমাকে যদি একটু খাবারের কষ্ট দিই, তখনও কি আমাকে বিশ্বাস করবে? তোমাকে যদি দারিদ্রের মধ্যে রাখি, তখনও কি আমাকে বিশ্বাস করবে?


সুরা মূলকের ২নম্বর আয়াতে আল্লাহ সুবাহানাহু তায়ালা বলেন, ‘এই পৃথিবীর জীবন পরকালের জন্য পরীক্ষা।’ আর আল্লাহর পরীক্ষা একেক জনের জন্য একেক রকম হয়ে থাকে। সবার পরীক্ষা একরকম হয় না। আপনি/আমি ভাগ্যবান যে খাবার পাচ্ছি। কিন্তু আল্লাহ অন্যভাবে আমাদের পরীক্ষা করছেন। সম্পদ দিয়ে তিনি পরীক্ষা করবেন, আপনি তার পথে খরচ করছেন কি না? এমনিভাবে কাউকে সন্তান দিয়ে, কাউকে খাবার দিয়ে, কাউকে স্বামী-স্ত্রী দিয়ে পরীক্ষা করেন।


মোটকথা আলাদা আলাদাভাবে সবাইকে পরীক্ষা করেন তিনি। আর পরীক্ষা দিতে বসে নিশ্চয় আপনি বলতে পারবেন না যে, ‘সবাইকে একই রকম পরীক্ষা দিতে হবে।’ তবে পরীক্ষা যাই হোক বিচারটা কিন্তু সঠিক হতে হবে। আর আল্লাহ আপনাকে যে পরীক্ষা দিবেন, সে হিসাবেই বিচার করবেন।


যেমন ১০০ মিটারের দৌড়ের প্রতিযোগিতায় কেউ যদি খোড়া থাকে তাহলে শুরুতে তাকে ৫০মিটার এগিয়ে রাখা হবে। আর যার কোনো সমস্যা নেই, দুটো পা’ই আছে তাকে প্রথম (১০০মিটার) থেকেই দৌড়াতে হবে। অতএব আল্লাহ আপনাকে যে পরীক্ষা দিবেন সে পরীক্ষার বিচার তিনিই করবেন। আল্লাহ আমাদের মাফ করুন।

Thursday 22 June 2017

সৎ রমণী পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ

★★★ সৎ রমণী পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদঃ


আবদুল্লাহ্ বিন আমর থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বলেন,
“পৃথিবীটা হচ্ছে ভোগের বস্তু। আর পৃথিবীর
মধ্যে শ্রেষ্ঠ সম্পদ হচ্ছে নেক রমণী।”[11]
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী
(ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেন,
“চারটি গুণের কারণে কোন রমণীকে বিবাহ
করা হয়, তার সম্পদ, বংশ মর্যাদা, সৌন্দর্য ও
ধর্মভীরুতা। ধর্মভীরু নারী বিবাহ করে তুমি
বিজয়ী হও। তোমার দু’হাত ধুলোলুন্ঠিত হোক।
”[12]
নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
আরো বলেন,
“চারটি বস্তু সৌভাগ্যের। ১) নেক রমণী ২)
প্রশস্ত আবাসস্থল ৩) সৎ প্রতিবেশী এবং ৪)
আরাম দায়ক আরোহী। আর চারটি বস্তুতে
রয়েছে দুর্ভাগ্য। ১) অসৎ নারী। ...।”[13]
এ সমস্ত উক্তি ও অনুরূপ আরো অনেক হাদীছ
থেকে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, একজন
মুসলিম পুরুষের জীবন সঙ্গী নির্বাচন করার
জন্য একজন নেক ও সৎ রমণী অনুসন্ধান করা কত
গুরুত্বপূর্ণ। আর মুসলিম রমণীর উপর আবশ্যক হচ্ছে
নেক স্ত্রী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত
করার জন্য সর্বোত্তম গুণাবলী সমূহ অর্জন করার
চেষ্টা করা। যাতে আল্লাহ তার উপর সন্তুষ্ট
হন। ইহ-পরকালে তার জীবন হয় পূণ্য ও সফলতায়
পরিপূর্ণ।
হে মুসলিম বোন! নিম্নে নেক রমণী হওয়ার
জন্য কুরআন-সুন্নাহ ও পূর্বসূরী নেক মনিষীদের
কতিপয় উক্তি সন্নিবেশ করা হল। এগুলোর
শিখুন এবং নিজের জীবনে তা বাস্তবায়ন
করার চেষ্টা করুন। কেননা নবী (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “শিক্ষা
অর্জন করার মাধ্যমে জ্ঞান লাভ করা যায়,
ধৈর্যের অনুশীলনের মাধ্যমে সহিষ্ণু হওয়া
যায়। যে ব্যক্তি কল্যাণ লাভের চেষ্টা
করে, তাকে উহা প্রদান করা হয়।”[14]

naimnourose.blogspot.com

★★★ ইসলামিক বাণী

কাকে বিয়ে করবেন?
শতকরা কয় জন মেয়ে খুঁজে পাওয়া
যাবে  যারা বাসর রাত্রে
স্বামীর বুকে হাত রেখে এই কথাটি
স্বামীকে সত্যি করে বলতে পারবে
যে, আমি তোমাকে সেই
(সতীত্ব) যৌবন আজ উপহার দিলাম, যেই
(সতীত্বে) যৌবনে কলংকের কোনো
দাগ
লাগে নাই।
আমি তোমাকে এমন একটি দেহ আজ
উপহার দিলাম, যেই দেহতে অতীত
জীবনে
কোনো পর পুরুষের হাত লাগে নাই।
পুরুষের অবস্থাও তাই!
কোন পুরুষ ও জোড় গলায় বলতে পারবে
না যে, আমি কোন মেয়ের
কলংকে দাগ লাগাই নাই। practice match
খেলা হয়ে যায় বিয়ের আগেই!
হাজার হোক পুরুষতো!
বাঙ্গালী সমাজে আবার পুরুষের সব
কিছু মাফ!
ও ভাইসাব, এখানে মাফ পেতে
পারেন আল্লাহর কাছে
পাবেন না! তবে ভয়ের কিছু নেই …
আপনি ঠিক যেরকম আপনার life partner ও
ঠিক তাই ই হবে!
আল্লাহ কখনোই বেইনসাফ নন . . .
আপনি অসতী মেয়ে আর আপনার
স্বামীটি পুত
পবিত্র হাজী সাহেব এমনটা কখনোই
নয়! আপনি
school /college /varsity life এর playboy আর
আপনার স্ত্রী সতী স্বাধী কুমারী
রমনী এটা
কখনোই সম্ভব নয়!
হ্যাঁ তবে সবকিছু জেনে শুনে নিয়ে
দুজন যদি দুজনকে বিয়ে করেন সেটা
ভিন্ন কথা!
না জেনে দুজন দুজনকে বিয়ে করছেন
আর বিয়ের পর
বলবেন “আমিতো তোমাকে ভালো
ভাবছিলাম ”
এটা হবেনা কেননা আল্লাহ তায়ালা
বলেই দিচ্ছেন সূরা
আন-নূর এর ০৩ নাম্বার আয়াতে
‘ব্যভিচারী পুরুষ
কেবল ব্যভিচারীনী এবং মুশরিকা
নারীকেই বিয়ে
করে এবং ব্যভিচারিণীকে কেবল
ব্যভিচারী এবং
মুশরিক পুরুষই বিয়ে করে.. এদেরকে
মুমিনদের জন্য হারাম করা হয়েছে.

بسم الله الرحمن الرحيم

নারীদের মাহরাম তথা যাদের সাথে দেখা করা জায়েজ
১-বাপ, দাদা, নানা ও তাদের উর্ধ্বতন ক্রমানু পুরুষগণ।
২-সহোদর ভাই, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় ভাই।
৩-শ্বশুর, আপন দাদা শ্বশুর ও নানা শ্বশুর এবং তাদের উর্ধ্বতন ক্রমানু পুরুষগণ।
৪-আপন ছেলে, ছেলের ছেলে, মেয়ের ছেলে এবং তাদের ঔরষজাত পুত্র সন্তান এবং কন্যা সন্তানদের স্বামী।
৫-স্বামীর অন্য স্ত্রীর গর্ভজাত পুত্র।
৬-ভাতিজা, ভাগিনা তথা সহোদর, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় ভাই ওবোনের ছেলে ও তাদের অধঃস্থন কোন ছেলে।
৭-আপন চাচা অর্থাৎ বাপের সহোদর,বৈপিত্রেয় ও বৈমাত্রেয় ভাই।
৮-আপন মামা তথা মায়ের সহোদর, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় ভাই।
৯-দুধ সম্পর্কীয় ছেলে, উক্ত ছেলের ছেলে, দুধ সম্পর্কীয় মেয়ের ছেলে ও তাদের ঔরষজাত যে কোন পুত্র সন্তান এবং দুধ সম্পর্কীয় মেয়ের স্বামী।
১০-দুধ সম্পর্কীয় বাপ, চাচা, মামা, দাদা, নানা ও তাদের উর্ধ্বতন ক্রমানু পুরুষগণ।
১১-দুধ সম্পর্কীয় ভাই, দুধ ভাইয়ের ছেলে, দুধ বোনের ছেলে এবং তাদের ঔরষজাত যে কোন পুত্র সন্তান।
১২-শরীয়ত অনুমোদিত বৈধ স্বামী।
১৩-যৌন শক্তিহীন এমন বৃদ্ধ, যারমাঝে মহিলাদের প্রতি কোন আকর্ষণ নেই আবার মহিলাদেরও তারপ্রতি কোন আকর্ষণ নেই।
১৪-অপ্রাপ্ত বয়স্ক এমন বালক যার মাঝে এখনো যৌন আকর্ষণ সৃষ্টি হয়নি।
উপরোক্ত পুরুষগণ ছাড়া কোন মহিলার জন্য অন্য কোন পুরুষের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ সম্পূর্ণ হারাম।

naimnourose.blogspot.com

★★★ যে দুই কারণে অধিকাংশ মানুষ জাহান্নামী হবে -

মহান আল্লাহ তায়ালা নবী রাসূল (সা.)-এর উম্মতদের জন্য রমজান মাস দিয়েছেন। যাতে করে মানুষ সারা বছরের পাপ থেকে মুক্তি লাভ করে। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের প্রিয় নবী রাসূল (সা.)-এর উম্মতদের জন্য জান্নাতে যাওয়ার রাস্তা সহজ করে দিয়েছেন। আর জাহান্নামের যাওয়ার রাস্তা করেছেন অনেক কঠিন। তাইতো পবিত্র বা নেক কোন কাজের নিয়্যত করলে আমল নামায় সওয়াব যোগ হতে থাকে। অন্যদিকে খারাপ কাজ সংগঠিত হওয়ার পরেই কেবল তা পাপে পরিণত হয়।

চলার পথে অনেক মানুষ এমন কিছু করে থাকে, যার জন্য সে জাহান্নামের আগুনে সারাজীবন জ্বলবে। আসুন জেনে নিই কোন দুটি কাজের জন্য অধিকাংশ মানুষই জাহান্নামের আগুনে জ্বলবে।

হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদীসে উল্লেখ আছে, নবী কারীম (সা.) বলেন, সবচেয়ে বেশি যে বস্তু মানুষকে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাবে তা দুটি ফাকা জায়গা আর তা হলো ১. লজ্জা স্থান ২. মুখ ( জিহ্বা )
অর্থ্যাৎ যারা (নর-নারী) তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করবে না তারাই জাহান্নামী।

★★★ যিনা না করেও যেই নারীরা যিনাকারিনী...

কোনো নারী যদি পারফিউম/সেন্ট/
বডি স্প্রে দিয়ে বাইরে যান আর তার
সুগন্ধি গাইরে মাহরাম মানুষেরা পায়,
তাহলে তিনি ব্যভিচারিণী বলে গণ্য
হবেন। এই কথা আমাদের নয় স্বয়ং
রাসুলে কারিম (সা:) এর।
তিনি বলেছেন:
“কোন নারী সুগন্ধি মেখে কোন
সম্প্রদায়ের নিকট দিয়ে যদি এজন্য
অতিক্রম করে যে তারা তার কাছ
থেকে সুঘ্রাণ লাভ করবে, তাহলে সে
ব্যভিচারিণী।”
[আবু দাউদ: ৪/৭৯; তিরমিযী:
৫/১০৬;নাসাঈ: ৮/১৫৩

★ মহান আল্লাহ মেয়েদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, “আর তোমরা নিজেদের গৃহে অবস্থান কর, প্রাচীন জাহেলী/অজ্ঞতার যুগের মত সৌন্দর্য প্রদর্শন করো না।” –সূরা আহযাব (৩৩:৩৩)
কিন্তু স্বামী বা অভিভাবকের অনুপস্থিতে যদি (প্রয়োজনে) বাহিরে যেতেই হয়, তাহলে কিভাবে যেতে হবে সে প্রসঙ্গে নির্দেশনা দিয়ে আল্লাহ বলেন, “হে নবী! আপনি আপনার পত্নীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।” –সূরা আহযাব (৩৩: ৫৯)
আল্লাহ আরও বলেন, “ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে।” –সূরা নুর (২৪:৩১)
আল্লাহ অনত্র বলেন, “তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।” –সূরা নুর (২৪:৩১)
অন্যদিকে রসূল (স.) বলেছেন, “কোন পুরুষ যেন অপর (বেগানা) মহিলার সঙ্গে নিভৃতে অবস্থান না করে, কোন স্ত্রীলোক যেন মাহরাম সঙ্গী ছাড়া সফর না করে।” -সহীহুল বুখারী (হা/৩০০৬, ১৮৬২:

রসূল (স.) আরও বলেছেন, “মেয়ে মানুষের সবটাই লজ্জাস্থান (গোপনীয়)। আর সে যখন বের হয়, তখন শয়তান তাকে পুরুষের দৃষ্টিতে সুশোভন করে তুলে।” -তিরমিযী, মিশকাত (হা/৩১০৯)
রসূল (স.) এটাও বলেছেন যে, “নিশ্চয় স্ত্রীলোক পর্দার বস্তু। এরা যখন বাড়ী হতে বের হয় তখন শয়তান তাদের প্রতি উৎ পেতে থাকে। তারা আল্লাহ তা’আলার খুব বেশি নিকটবর্তী হয় তখন, যখন তারা নিজেদের বাড়ীতে অবস্থান করে।” –হাফিয আবূ বাকার বাযযার
রসূল (স.) নারীদেরকে সুগন্ধি ব্যবহারের বিষয়ে বলেছেন, “প্রতিটি চোখই যিনাকারী। যখন কোন নারী সুগন্ধি লাগিয়ে পুরুষদের কোন মাজলিসের পার্শ দিয়ে গমন করে তখন সে এরুপ এরুপ অর্থাৎ যিনাকারী।” -আত্-তিরমিযী (হা/২৭৮৬; হাসান, হুসাইন আল মাদানী প্রকাশনী)
আবূ হুরাইরাহ (রা.) বলেন, রসূল (স.) বলেছেন, “নারীরা রাস্তার মধ্য দিয়ে চলাচল করবে না।” - সিলসিলাহ সিহীহাহ (হা/৮৫৬)
এই যদি বাহিরে গমনকারী মেয়েদের ব্যাপারে রসূল (স.) এর নির্দেশনা হয়, তাহলে যে নারী বেগানা পুরুষের সাথে প্রেম করে সে উপরে বর্ণিত রসূল (স.) এর কোন নির্দেশকে মান্য করতেছে?