সহবাসকালে কিছু করণীয় রয়েছে, যা পালন করা প্রত্যেক নারী- পুরুষের জন্য কর্তব্য।
(১) সহবাসকালে দো‘আ পাঠ করা : সহবাসের
সময়
রাসূল (ছাঃ) নিম্নোক্ত দো‘আ পাঠ করতে
বলেছেন, ﺑِﺴْﻢِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺟَﻨِّﺒْﻨَﺎ ﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥَ ﻭَﺟَﻨِّﺐِ ﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥَ ﻣَﺎ
ﺭَﺯَﻗْﺘَﻨَﺎ - উচ্চারণ : ‘বিসমিল্লা-হি আল্লা-হুম্মা
জান্নিবনাশ
শায়তা-না ও জান্নিবিশ শায়তানা মা
রাযাকতানা’। অর্থ:
‘আল্লাহর নামে শুরু করছি। হে আল্লাহ!
আমাদেরকে শয়তানের প্রভাব থেকে দূরে
রাখুন এবং আমাদের যে সন্তান দান করবেন
তাদেরকে শয়তানের প্রভাব থেকে বাঁচিয়ে
রাখুন’।[1] এ দো‘আ পাঠ করার পরে সহবাস করলে
আল্লাহ যদি ঐ স্বামী-স্ত্রীকে কোন সন্তান
দান করেন, তাহ’লে শয়তান সন্তানের কোন
ক্ষতি করতে পারবে না।[2]
সহবাসের ক্ষেত্রে স্বামী স্ত্রীর
সম্মুখভাগে যে দিক দিয়ে ইচ্ছা সহবাস করতে
পারে। আল্লাহ বলেন, ﻧِﺴَﺎﺅُﻛُﻢْ ﺣَﺮْﺙٌ ﻟَﻜُﻢْ ﻓَﺄْﺗُﻮْﺍ ﺣَﺮْﺛَﻜُﻢْ ﺃَﻧَّﻰ
ﺷِﺌْﺘُﻢْ ‘তোমাদের স্ত্রীগণ তোমাদের জন্য
শস্যক্ষেত স্বরূপ। অতএব তোমরা তোমাদের
শস্যক্ষেত্রে যেভাবে ইচ্ছা আগমন
কর’ (বাক্বারাহ ২/২২৩)।
উম্মু সালামা (রাঃ) বলেন, মুহাজিরগণ
মদীনায় এসে
আনছার মহিলাদের বিবাহ করলেন। মুহাজির
মহিলারা চিৎ
হয়ে শয়ন করত। কিন্তু আনছার মহিলারা চিৎ হয়ে
শয়ন করত না। একদা এক মুহাজির ব্যক্তি তার
আনছার
স্ত্রীকে এরূপ করার ইচ্ছা করলে সে রাসূল
(ছাঃ)-
কে জিজ্ঞেস না করে তা করতে অস্বীকৃতি
জানাল। উম্মু সালামা (রাঃ) বলেন, সে
মহিলা রাসূল (ছাঃ)-
এর নিকট আসল, কিন্তু তাঁকে জিজ্ঞেস করতে
লজ্জাবোধ করল। তাই উম্মু সালামা (রাঃ)
তাঁকে
জিজ্ঞেস করলেন। অতঃপর ﻧِﺴَﺎﺅُﻛُﻢْ ﺣَﺮْﺙٌ ﻟَﻜُﻢْ ﻓَﺄْﺗُﻮْﺍ ﺣَﺮْﺛَﻜُﻢْ
ﺃَﻧَّﻰ ﺷِﺌْﺘُﻢْ ‘তোমাদের স্ত্রীগণ তোমাদের জন্য
শস্যক্ষেত স্বরূপ। অতএব তোমরা তোমাদের
শস্যক্ষেত্রে যেভাবে ইচ্ছা আগমন
কর’ (বাক্বারাহ ২/২২৩) আয়াতটি অবতীর্ণ হয়।
রাসূল
(ছাঃ) বললেন, না, শুধুমাত্র একই রাস্তায়
সহবাস করা
যাবে’।[3] অন্যত্র রাসূল (ছাঃ) বলেন, ﺍﺋْﺘِﻬَﺎ ﻣُﻘْﺒِﻠَﺔً،
ﻭَﻣُﺪْﺑِﺮَﺓً
ﺇِﺫَﺍ ﻛَﺎﻥَ ﺫَﻟِﻚَ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻔَﺮْﺝِ - ‘তার নিকটে আস, সম্মুখ ও পিছন
উভয় দিক দিয়ে, যদি তা লজ্জাস্থান হয়’।[4] তিনি
আরো বলেন, ﺃَﻗْﺒِﻞْ ﻭَﺃَﺩْﺑِﺮْ ﻭَﺍﺗَّﻖِ ﺍﻟﺪُّﺑُﺮَ ﻭَﺍﻟْﺤِﻴْﻀَﺔَ . ‘সামনে
কর, পিছনে কর এবং পায়ুপথ ও ঋতুস্রাব থেকে
বেঁচে থাক’।[5]
(২) নিষিদ্ধ স্থানে সহবাস না করা : স্ত্রীর
পায়ুপথে
সহবাস করা নিষিদ্ধ। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ﻻَ ﻳَﻨْﻈُﺮُ
ﺍﻟﻠﻪُ ﺇِﻟَﻰ ﺭَﺟُﻞٍ
ﻳَﺄْﺗِﻲ ﺍﻣْﺮﺃَﺗَﻪُ ﻓِﻲْ ﺩُﺑُﺮِﻫَﺎ - ‘আল্লাহ ঐ ব্যক্তির দিকে
তাকাবেন না যে তার স্ত্রীর পায়ুপথে সহবাস
করে’।[6] তিনি আরো বলেন, ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠﻪَ ﻻَ ﻳَﺴْﺘَﺤْﻴِﻰ ﻣِﻦَ
ﺍﻟْﺤَﻖِّ . ﺛَﻼَﺙَ ﻣَﺮَّﺍﺕٍ، ﻻَ ﺗَﺄْﺗُﻮﺍ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀَ ﻓِﻰ ﺃَﺩْﺑَﺎﺭِﻫِﻦَّ . ‘নিশ্চয়ই
আল্লাহ
হকের ব্যাপারে লজ্জাবোধ করেন না। কথাটি
তিনি
তিনবার বলেছেন। তোমরা মহিলাদের পায়ুপথে
সহবাস কর না’।[7]
মহিলাদের পায়ুপথ ব্যবহার করাকে হারাম করা
হয়েছে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ﺇِﺗْﻴَﺎﻥُ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀِ ﻓِﻰْ ﺃَﺩْﺑَﺎﺭِﻫِﻦَّ ﺣَﺮَﺍﻡٌ
‘নারীদের পিছন দিয়ে সহবাস করা হরাম’।[8]
অন্যত্র তিনি বলেন, ﺇﻥَّ ﺍﻟﻠﻪَ ﻳَﻨْﻬَﺎﻛُﻢْ ﺃَﻥْ ﺗَﺄْﺗُﻮﺍ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀَ ﻓِﻲْ ﺃَﺩْﺑَﺎﺭِﻫِﻦَّ
- ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ
করেছেন তোমাদের স্ত্রীদের পায়ুপথ
ব্যবহার করতে’।[9]
(৩) নিষিদ্ধ সময়ে সহবাস না করা : ঋতু অবস্থায়
স্ত্রীর সাথে সহবাস করা হারাম। আল্লাহ
বলেন,
ﻭَﻳَﺴْﺄَﻝُﻭﻧَﻚَ ﻋَﻦِ ﺍﻟْﻤَﺤِﻴْﺾِ ﻗُﻞْ ﻫُﻮَ ﺃَﺫًﻯ ﻓَﺎﻋْﺘَﺰِﻟُﻮﺍ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀَ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻤَﺤِﻴْﺾِ ﻭَﻻَ
ﺗَﻘْﺮَﺑُﻮْﻫُﻦَّ ﺣَﺘَّﻰ ﻳَﻄْﻬُﺮْﻥَ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺗَﻄَﻬَّﺮْﻥَ ﻓَﺄْﺗُﻮْﻫُﻦَّ ﻣِﻦْ ﺣَﻴْﺚُ ﺃَﻣَﺮَﻛُﻢُ ﺍﻟﻠﻪُ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠﻪَ
ﻳُﺤِﺐُّ ﺍﻟﺘَّﻮَّﺍﺑِﻴْﻦَ ﻭَﻳُﺤِﺐُّ ﺍﻟْﻤُﺘَﻄَﻬِّﺮِﻱ ْﻥَ - ‘আর লোকেরা
তোমাকে প্রশ্ন করছে মহিলাদের ঋতুস্রাব
সম্পর্কে। তুমি বল, ওটা হ’ল কষ্টদায়ক বস্ত্ত।
অতএব ঋতুকালে স্ত্রীসঙ্গ হ’তে বিরত থাক।
পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত তাদের নিকটবর্তী হয়ো
না। অতঃপর যখন তারা ভালভাবে পবিত্র হবে,
তখন
আল্লাহর নির্দেশ মতে তোমরা তাদের নিকট
গমন কর। নিশ্চয় আল্লাহ তওবাকারীদের
ভালবাসেন ও পবিত্রতা অর্জনকারীদের
ভালবাসেন’ (বাক্বারাহ ২/২২২)।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ﻣَﻦْ ﺃَﺗَﻰ ﺣَﺎﺋِﻀًﺎ ﺃَﻭِ ﺍﻣْﺮَﺃَﺓً ﻓِﻰْ
ﺩُﺑُﺮِﻫَﺎ ﺃَﻭْ
ﻛَﺎﻫِﻨًﺎ ﻓَﺼَﺪَّﻗَﻪُ ﺑِﻤَﺎ ﻳَﻘُﻮْﻝُ ﻓَﻘَﺪْ ﻛَﻔَﺮَ ﺑِﻤَﺎ ﺃُﻧْﺰِﻝَ ﻋَﻠَﻰ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ - ‘যে ব্যক্তি
কোন ঋতুবতী স্ত্রীর সাথে কিংবা তার
পায়ুপথে সঙ্গম করে অথবা গণকের কাছে যায়
এবং
তার কথা বিশ্বাস করে, সে মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর
প্রতি যা
অবতীর্ণ হয়েছে তা অস্বীকার করল’।[10]
উল্লেখ্য, ঋতুবতী স্ত্রীর সাথে সহবাস
ব্যতীত সবকিছু বৈধ। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ﺟَﺎﻣِﻌُﻮْﻩَّﻥُ
ﻓِﻰ
ﺍﻟْﺒُﻴُﻮْﺕِ ﻭَﺍﺻْﻨَﻌُﻮْﺍ ﻛُﻞَّ ﺷَﻰْﺀٍ ﻏَﻴْﺮَ ﺍﻟﻨِّﻜَﺎﺡِ - ‘তোমরা তাদের
সাথে (তাদের হায়েয অবস্থায়) একই ঘরে
অবস্থান ও অন্যান্য কাজ করতে পার শুধু সহবাস
ছাড়া’।
[11]
আয়েশা (রাঃ) বলেন, আমাদের কেউ হায়েয
অবস্থায় থাকলে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) তার
সাথে
মিশামিশি করতে চাইলে তাকে হায়েযে
শক্তভাবে ইযার পরার নির্দেশ দিতেন। তারপর
তার
সাথে মিশামিশি করতেন’।[12] অন্য বর্ণনায় আছে,
ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻰَّ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻛَﺎﻥَ ﺇِﺫَﺍ ﺃَﺭَﺍﺩَ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﺤَﺎﺋِﺾِ ﺷَﻴْﺌًﺎ ﺃَﻟْﻘَﻰ ﻋَﻠَﻰ
ﻓَﺮْﺟِﻬَﺎ ﺛَﻮْﺑًﺎ . ‘নবী করীম (ছাঃ) তাঁর ঋতুবতী
স্ত্রীর সাথে কিছু করতে চাইলে স্ত্রীর
লজ্জাস্থানের উপর কাপড় রেখে তারপর
করতেন’।[13]
স্ত্রী হায়েয থেকে পবিত্র হ’লে তার সাথে
সহবাস করা বৈধ। আল্লাহ বলেন, ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺗَﻄَﻬَّﺮْﻥَ ﻓَﺄْﺗُﻮْﻫُﻦَّ
ﻣِﻦْ
ﺣَﻴْﺚُ ﺃَﻣَﺮَﻛُﻢُ ﺍﻟﻠﻪُ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠﻪَ ﻳُﺤِﺐُّ ﺍﻟﺘَّﻮَّﺍﺑِﻴْﻦَ ﻭَﻳُﺤِﺐُّ ﺍﻟْﻤُﺘَﻄَﻬِّﺮِﻱ ْﻥَ- ‘অতঃপর
যখন তারা ভালভাবে পবিত্র হবে, তখন
আল্লাহর
নির্দেশ মতে তোমরা তাদের নিকট গমন কর।
নিশ্চয় আল্লাহ তওবাকারীদের ভালবাসেন ও
পবিত্রতা অর্জনকারীদের
ভালবাসেন’ (বাক্বারাহ
২/২২২)।
ঋতুকালে স্ত্রীর সাথে সহবাস করলে
কাফফারা
দিতে হবে। নবী করীম (ছাঃ) এমন ব্যক্তি
সম্পর্কে বলেন, ﺍﻟَّﺬِﻱْ ﻳَﺄْﺗِﻲْ ﺍﻣْﺮَﺃَﺗَﻪُ ﻭَﻫِﻰَ ﺣَﺎﺋِﺾٌ ﻗَﺎﻝَ ﻳَﺘَﺼَﺪَّﻕُ
ﺑِﺪِﻳْﻨَﺎﺭٍ ﺃَﻭْ ﻧِﺼْﻒِ ﺩِﻳْﻨَﺎﺭٍ - ‘যে ব্যক্তি ঋতুবতী স্ত্রীর
সাথে সহবাস করে, সে যেন এক অথবা অর্ধ
দীনার ছাদাকা করে’।[14]
উল্লেখ্য যে, ১ ভরি সমান ১১.৬৬ গ্রাম। হাদীছে
বর্ণিত এক দীনার সমান ৪.২৫ গ্রাম স্বর্ণ। আর
অর্ধ দীনার সমান ২.১২৫ গ্রাম স্বর্ণ।
(৪) সহবাসের পর ওযূ করা : সহবাসের পরে
ঘুমাতে ও পানাহার করতে চাইলে কিংবা
পুনরায় মিলিত
হ’তে চাইলে মাঝে ওযূ করা সুন্নাত।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)
বলেন, ﺛَﻼَﺛَﺔٌ ﻻَ ﺗَﻘْﺮَﺑُﻬُﻢُ ﺍﻟْﻤَﻼَﺋِﻜَﺔُ ﺟِﻴْﻔَﺔُ ﺍﻟْﻜَﺎﻓِﺮِ ﻭَﺍﻟْﻤُﺘَﻀَﻤِّﺦُ ﺑِﺎﻟْﺨَﻠُﻮْﻕِ
ﻭَﺍﻟْﺠُﻨُﺐُ ﺇِﻻَّ ﺃَﻥْ ﻳَﺘَﻮَﺿَّﺄ -َ ‘তিন ব্যক্তির কাছে ফেরেশতা
আসে না; কাফের ব্যক্তির লাশ, জাফরান
ব্যবহারকারী এবং অপবিত্র ব্যক্তি যতক্ষণ না
সে ওযূ
করে’।[15]
আয়েশা (রাঃ) বলেন, ﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻰُّ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺇِﺫَﺍ
ﺃَﺭَﺍﺩَ
ﺃَﻥْ ﻳَﻨَﺎﻡَ ﻭَﻫْﻮَ ﺟُﻨُﺐٌ، ﻏَﺴَﻞَ ﻓَﺮْﺟَﻪُ، ﻭَﺗَﻮَﺿَّﺄَ ﻟِﻠﺼَّﻼَﺓِ . ‘নবী করীম
(ছাঃ) যখন অপবিত্র অবস্থায় ঘুমাতে ইচ্ছা
করতেন
তখন তিনি লজ্জাস্থান ধুয়ে ছালাতের ওযূর
ন্যায় ওযূ
করতেন’।[16]
আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর বলেন, ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব
(রাঃ) আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)-কে বললেন, যদি
রাতে
কোন সময় তাঁর গোসল ফরয হয় (তখন কী
করতে হবে?) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাঁকে বললেন,
ওযূ
করবে, লজ্জাস্থান ধুয়ে নিবে তারপর ঘুমাবে।[17]
অন্যত্র তিনি বলেন, ﻧَﻌَﻢْ ﻟِﻴَﺘَﻮَﺿَّﺄْ ﺛُﻢَّ ﻟْﻴَﻨَﻢْ ﺣَﺘَّﻰ ﻳَﻐْﺘَﺴِﻞَ ﺇِﺫَﺍ ﺷَﺎﺀَ
‘হ্যাঁ সে যেন ওযূ করে। অতঃপর সে যেন ঘুমায়
এবং যখন চাইবে গোসল করবে’।[18] তিনি
আরো বলেন, ﻧَﻌَﻢْ ﻭَﻳَﺘَﻮَﺿَّﺄُ ﺇِﻥْ ﺷَﺎﺀَ ‘হ্যাঁ, যদি সে চায় ওযূ
করবে’।[19] উপরোক্ত হাদীছ সমূহ দ্বারা
প্রতীয়মান হয় যে, সহবাসের পরে ওযূ করা
আবশ্যিক নয় বরং সুন্নাত। যেমন আয়েশা (রাঃ)
বলেন, ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳَﻨَﺎﻡُ ﻭَﻫُﻮَ ﺟُﻨُﺐٌ ﻣِﻦْ
ﻏَﻴْﺮِ ﺃَﻥْ ﻳَﻤَﺲَّ ﻣَﺎﺀً . ‘রাসূলুল্লাহ কোনরূপ পানি স্পর্শ
না
করেই নাপাক অবস্থায় ঘুমাতেন’।[20]
উল্লেখ্য, ওযূর পরিবর্তে তায়াম্মুম করাও যায়।
আয়েশা (রাঃ) বলেন, ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ
ﺇِﺫَﺍ
ﺃَﺟْﻨَﺐَ ﻓَﺄَﺭَﺍﺩَ ﺃَﻥْ ﻳَﻨَﺎﻡَ ﺗَﻮَﺿَّﺄَ ﺃﻭ ﺗَﻴَﻤَّﻢَ - ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)
যখন
অপবিত্র হ’তেন এবং ঘুমানোর ইচ্ছা করতেন তখন
ওযূ করতেন বা তায়াম্মুম করতেন’।[21]
(৫) ঘুমের পূর্বে অপবিত্রতার গোসল করা উত্তম
: নিম্নোক্ত হাদীছ থেকে প্রতীয়মান হয়
যে, জানাবাতের পরে গোসল করা উত্তম।
আব্দুল্লাহ বিন কায়েস বলেন, আমি আয়েশা
(রাঃ)-
কে জিজ্ঞেস করলাম, নবী করীম (ছাঃ) অপবিত্র
অবস্থায় কিরূপ করতেন? তিনি কি ঘুমের পূর্বে
গোসল করতেন, না গোসলের পূর্বে
ঘুমাতেন? আয়েশা (রাঃ) বলেন, ﻛُﻞُّ ﺫَﻟِﻚَ ﻗَﺪْ ﻛَﺎﻥَ ﻳَﻔْﻌَﻞُ
ﺭُﺑَّﻤَﺎ
ﺍﻏْﺘَﺴَﻞَ ﻓَﻨَﺎﻡَ ﻭَﺭُﺑَّﻤَﺎ ﺗَﻮَﺿَّﺄَ ﻓَﻨَﺎﻡَ . ﻗُﻠْﺖُ ﺍﻟْﺤَﻤْﺪُ ﻟِﻠَّﻪِ ﺍﻟَّﺬِﻯ ﺟَﻌَﻞَ ﻓِﻰ ﺍﻷَﻣْﺮِ
ﺳَﻌَﺔً . ‘তিনি উভয়টি করতেন। কখনো গোসল
করে ঘুমাতেন, আবার কখনো ওযূ করে
ঘুমাতেন। আমি বললাম, সমস্ত প্রশংসা একমাত্র
আল্লাহর যিনি কর্মে প্রশস্ততা দান করেছেন’।
[22]
অন্য হাদীছে এসেছে, ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ
ﻃَﺎﻑَ ﺫَﺍﺕَ ﻳَﻮْﻡٍ ﻋَﻠَﻰ ﻧِﺴَﺎﺋِﻪِ ﻳَﻐْﺘَﺴِﻞُ ﻋِﻨْﺪَ ﻫَﺬِﻩِ ﻭَﻋِﻨْﺪَ ﻫَﺬِﻩِ ﻓَﻘُﻠْﺖُ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ
ﺍﻟﻠﻪِ ﺃَﻻَ ﺗَﺠْﻌَﻠُﻪُ ﻏُﺴْﻼً ﻭَﺍﺣِﺪًﺍ؟ ﻗَﺎﻝَ : ﻫَﺬَﺍ ﺃَﺯْﻛَﻰ ﻭَﺃَﻃْﻬَﺮُ ﻭَﺃَﻃْﻴَﺐُ .‘একদ
া নবী করীম (ছাঃ) তাঁর স্ত্রীদের সাথে
সহবাস
করলেন। তিনি এর কাছে গোসল করলেন এবং ওর
কাছেও গোসল করলেন। রাবী বলেন, আমি
তাঁকে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি
তাকে
একটি গোসলে পরিণত করতে পারলেন না? তিনি
বললেন, এটা অধিকতর পরিচ্ছন্ন, অতি উত্তম ও
সর্বাধিক পবিত্রতা’।[23]
(৬) স্বামী-স্ত্রী এক সাথে গোসল করা :
স্বামী-স্ত্রীর একস্থানে একত্রে গোসল
করা বৈধ। আয়েশা (রাঃ) বলেন, ﻛُﻨْﺖُ ﺃَﻏْﺘَﺴِﻞُ ﺃَﻧَﺎ ﻭَﺭَﺳُﻮْﻝُ
ﺍﻟﻠﻪِ
ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻣِﻦْ ﺇِﻧَﺎﺀٍ ﺑَﻴْﻨِﻰْ ﻭَﺑَﻴْﻨَﻪُ ﻭَﺍﺣِﺪٍ ﻓَﻴُﺒَﺎﺩِﺭُﻧِﻰْ ﺣَﺘَّﻰ ﺃَﻗُﻮﻝَ ﺩَﻉْ
ﻟِﻰْ ﺩَﻉْ ﻟِﻰْ . ﻗَﺎﻟَﺖْ ﻭَﻫُﻤَﺎ ﺟُﻨُﺒَﺎﻥِ . ‘আমি ও আল্লাহর রাসূল
(ছাঃ)
উভয়েই একই পাত্র থেকে গোসল করতে
ছিলাম। এমনকি আমি বলতাম আমার জন্য রাখেন,
আমার জন্য রাখেন। আয়েশা (রাঃ) বলেন, উভয়
অপবিত্র অবস্থায় ছিলেন’।[24]
[1]. বুখারী হা/১৪১, ৩২৭১, ৫১৬৫; মুসলিম
হা/১৪৩৪;
আহমাদ হা/১৯০৮, বুলূগুল মারাম হা/১০২০।
[2]. বুখারী হা/১৪১, ৩২৭১; মুসলিম হা/১৪৩৪;
মিশকাত
হা/২৪১৬।
[3]. আহমাদ, ইরওয়া ৭/৬১; আদাবুয যিফাফ পৃঃ
৩০।
[4]. ত্বাবারাণী, কাবীর, ইরওয়া ৭/৬২;
আদাবুয যিফাফ,
পৃঃ ২৭।
[5]. তিরমিযী হা/২৯৮০; মিশকাত হা/৩১৯১, সনদ
হাসান।
[6]. ইবনু মাজাহ হা/৬৩৯; মিশকাত হা/৩৫৮৫;
সিলসিলা
ছহীহাহ হা/৩৩৭৮ আলোচনা দ্রঃ; ছহীহুল
জামে‘
হা/৭৮০২।
[7]. ইবনু মাজাহ হা/১৯২৪; মিশকাত হা/৩১৯২;
ছহীহাহ
হা/৩৩৭৭।
[8]. নাসাঈ, সুনানুল কুবরা, ছহীহাহ হা/৮৭৩;
ছহীহুল
জামে‘ হা/১২৬।
[9]. ছহীহুল জামে‘ হা/১৯২১।
[10]. ইবনু মাজাহ হা/৬৩৯; তিরমিযী হা/১৩৫;
মিশকাত
হা/৫৫১, হাদীছ ছহীহ।
[11]. আবুদাউদ হা/২৫৮, ২১৬৫, সনদ ছহীহ।
[12]. বুখারী হা/৩০২; মুসলিম হা/২৯৩।
[13]. আবুদাউদ হা/২৭২; ছহীহুল জামে‘
হা/৪৬৬৩।
[14]. আবুদাঊদ হা/২৬৪; মুসনাদে আহমাদ
হা/২১২১;
সনদ ছহীহ।
[15]. আবুদাউদ হা/৪১৮০; ছহীহ আত-তারগীব
হা/১৭৩, সনদ হাসান।
[16]. বুখারী হা/২৮৮।
[17]. বুখারী হা/২৯০; মুসলিম হা/৩০৬; মিশকাত
হা/৪৫২।
[18]. মুসলিম হা/৩০৬; আদাবুয যিফাফ, পৃঃ ৪২।
[19]. ইবনু হিববান হা/১২১৬; আদাবুয যিফাফ, পৃঃ
৪২।
[20]. আবূদাঊদ হা/২৮৮; তিরমিযী হা/১১৮
‘পবিত্রতা’
অধ্যায়; ইবনু মাজাহ হা/৫৮৪ ‘পবিত্রতা’
অধ্যায়, সনদ
ছহীহ।
[21]. বায়হাক্বী, আস-সুনানুল কুবরা, হা/৯৬৮;
আদাবুয
যিফাফ, পৃঃ ৪৫।
[22]. মুসলিম হা/৩০৭, ‘অপবিত্র ব্যক্তির ঘুমানো
জায়েয’ অনুচ্ছেদ; আবুদাউদ হা/১২৯১; তিরমিযী
হা/৪৪৯।
[23]. আবূদাঊদ হা/২১৯; মিশকাত হা/৪৭০, সনদ
হাসান।
[24]. মুসলিম হা/৩২১; মিশকাত হা/৪৪০।