Wap4dollar.com

Thursday 17 May 2018

রমজান বা ঈদ শুরু হবার জন্য চাঁদ দেখার নিয়ম কি ?




উত্তর : যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর। দরুদ ও সালাম আল্লাহর রাসূল (সা) এর উপর। পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
মুসলিমরা চাঁদ দেখে ঈদ করবে নাকি ক্যাল্কুলেশন করে আগে থেকে নির্ধারিত সময়ে ঈদ করবে নাকি সৌদি আরবের সাথে মিলিয়ে ঈদ করবে এ নিয়ে বিভিন্ন প্রকার প্রশ্ন রয়েছে। একটু ধৈর্য ধরে শুনুন। হাজার বছর ধরে মুসলিমরা এ পৃথিবীতে আছে। এতো বিশাল সময়ে চাঁদ দেখা নিয়ে তেমন কোন সমস্যা হয়নি। কেন হয়নি ? কারণ মুসলিমরা চাঁদের হিসাবে বার গনেছে। সূর্যের হিসাবে বার গননা করেনি। মনেকরুন আজকে শনিবার, আজ রাত আসার সাথে সাথেই মুসলিম মনষিগন একে রবিবার বলেছেন। কিন্তু সূর্যের হিসাবে আমরা রাত ১২টা থেকে বার গননা করে থাকি। সেজন্য চাঁদের বার এবং সূর্যের বার একই নয়। ধরুন, মরোক্কতে রাত আসার সাথে সাথে মাসের প্রথম চন্দ্র দেখা গেল। তারমানে সেই রাত থেকেই নতুন মাস গননা করা শুরু হয়ে গেছে, ঠিক তেমনি ভারতেও যদি চাঁদ দেখা যায় তাহলে সেখানেও প্রথম দিন গননা শুরু হয়ে গিয়েছে। ধরুন সেই নতুন মাসটি রমজান, তাহলে ভারতের রাত হল রমজান মাস, ঠিক তেমনি মরক্কোর মাস হল রমজান মাস, কিন্তু সূর্যের হিসাবে তারা একই দিন নয়। এমনকি এদের মধ্যে সূর্যের হিসাবে ০ দিন কিংবা ১ দিন কিংবা ২ দিনের মত পার্থক্যাও হতে পারে। কিন্তু চাঁদের হিসাবে কোন পার্থক্য নেই। ভাবুন সেই সময়ের খলিফা সবাইকে ১ রমজানে ১০টাকা করে বকশিশ দিবেন। তারমানে ভারতে যখন ১ রমজান আসবে তখন সেখান বকশিশ দেওয়া শুরু হবে। যখন মরোক্কোতে আসবে তখন সেখানেও দেওয়া শুরু হবে। এখানে আইনস্টাইনের স্বীকার্যের মত দুইটা কাঠামো। ১ম কাঠামো চাঁদ, ২য় কাঠামো সূর্য। প্রথম কাঠামোর দৃষ্টিতে যেটি ১ তারিখ, সেটি ২য় কাঠামোর দৃষ্টিতে একই তারিখ নাও হতে পারে। কোন সমস্যাই হবেনা, যদি আমরা একটি কাঠামো অনুসরণ করি।চলুন আমরা দেখে নেই, আমরা কোন কাঠামো মানবোঃ
يَسْأَلُوْنَكَ عَنِ الْأَهِلَّةِ قُلْ هِيَ مَوَاقِيْتُ لِلنَّاسِ وَالْحَجّ-
  • “‘লোকেরা তোমাকে জিজ্ঞেস করছে নবচন্দ্র সমূহের ব্যাপারে। বলে দাও যে, এটি মানুষের জন্য সময় সমূহের নিরূপক ও হজ্জের জন্য সময় নির্দেশক’ ”[সূরা বাকারা আয়াত ১৮৯]
এখানে ‘নতুন চাঁদ’ (هِلاَلٌ) না বলে ‘নতুন চাঁদ সমূহ’ (اَلْأَهِلَّةِ) বলার কারণ হ’ল এই যে, সদা সন্তরণশীল চাঁদ প্রতি মিনিটে ও সেকেন্ডে পৃথিবীর নতুন নতুন জনপদে নতুনভাবে উদিত হয়। ফলে এক চাঁদ বহু নতুন চাঁদে পরিণত হয়। এর সাথে মিল রেখেই বলা হয়েছেمَوَاقِيْتُ لِلنَّاسِ ‘মানুষের জন্য সময় সমূহের নিরূপক’।مَوَاقِيْتُ -এর একবচন مِيْقَاتٌ অর্থ ‘সময়’ বা ‘সময় নিরূপক’। বহুবচন আনার কারণ এই যে, চাঁদ যে অঞ্চলে ওঠে, সে অঞ্চলের সময় আগের অঞ্চল থেকে পৃথক। ফলে চাঁদ যত অঞ্চলে যখনই উদয় হবে, তত অঞ্চলে তখনই তার উদয়ের সময়কাল হিসাবে গণ্য হয়।
 #হে আল্লাহ! আপনি আমাদের জন্য এই চাঁদকে সৌভাগ্য ও ঈমান, শান্তি ও ইসলামের সঙ্গে উদিত করুন। আল্লাহই আমার ও তোমার রব।—জামে তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৫১
 #তোমরা (রমজানের) চাঁদ দেখে রোজা শুরু করবে এবং (ঈদের) চাঁদ দেখেই রোজা ছাড়বে। যদি আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয় (এবং চাঁদ দেখা না যায়) তাহলে মাসের ৩০ দিন পূর্ণ করে। অর্থাত্ আকাশ পরিচ্ছন্ন না থাকার কারণে চাঁদ দেখা না গেলে শাবান মাসের ৩০ দিন পূর্ণ করত রমজানের রোজা রাখা শুরু করবে।—সহিহ বুখারি ১/২৫৬, হাদিস : ১৯০৬
এই দুই হাদিস থেকে পরিষ্কার বুঝা যায় আমরা, চাঁদের কাঠামোই অনুষরণ করব। সূর্যের কাঠামোতে নয়, এমনকি সূর্যের কাঠামোতে এটা কোন তারিখ সেটাও বিবেচ্য বিষয় নয়। আমরা হিসাব করব এভাবে, প্রথম চাঁদ এক তারিখ, ১৪,১৫,১৬ তারিখে পূর্নিমা, আবার শেষের দিকে আমাবশ্যা আসবে। এর কোন ব্যাতিক্রম হবেনা।আশা করি চাঁদ দেখে ঈদ করতে হবে এব্যাপারে সবাই একমত। কারণ উপরের বুখারি শরিফের হাদিস থেকে বুঝা যায়, আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে ৩০ দিন পূর্ন করতে হবে। এখানে হিসাব নিকাশের বালাই রাখা হয়নি। মানে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হওয়াটাও আল্লাহ পাকের ইচ্ছার অধীন। এখানের মধ্যেও আমাদের ফয়সালা নিহিত আছে। তাই চাঁদ দেখাটা অত্যান্ত জরুরি।এখন প্রশ্ন হল কতজন মানুষকে চাঁদ দেখতে হবে। তার উত্তর আছে এই হাদিসেঃ
#আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে এমন এক ব্যক্তির চাঁদ দেখাই যথেষ্ট, যার দ্বীনদার হওয়া প্রমাণিত অথবা বাহ্যিকভাবে দ্বীনদার হিসেবে পরিচিত।—সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ২৩৪০-
শর্ত নোট করুন, আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে কেবল একজনের সাক্ষ্যও গ্রহণযোগ্য।
রসূলুল্লাহ (সা) এর নিজ আমল :
রসূলুল্লাহ (সা) ২য় হিজরী থেকে ১০ম হিজরী পর্যন্ত সর্বমোট ৯ বার পবিত্র রমযান মাসের রোযা রেখে ছিলেন। সুতরং আমাদের গভীর দৃষ্টি দেয়া উচিৎ, (সা)-এর আমলের দিকে। রমযান মাসে রোযা রাখা এবং শাওয়াল মাসে ঈদ করার ক্ষেত্রে তিনি হাদীস দু’টির প্রতিফলন কিভাবে করেছেন। উল্লেখিত হাদীস কারীমা অনুযায়ী রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম কি নিজে চাঁদ দেখে রোযা রেখেছেন, ঈদ করেছেন? না কি অন্যের দেখার সংবাদের মাধ্যমেও রোযা রেখেছেন, ঈদ করেছেন? এ প্রসংগে পবিত্র হাদীসে যে প্রমাণ পাওয়া যায় তা হচ্ছে- 
# আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন কিছু সংখ্যক মানুষ (রমযানের) নুতন চাঁদ দেখল। আমি রসূলুল্লাহ (সা)কে সংবাদ দিলাম যে আমিও উক্ত চাঁদ দেখেছি। ফলে রসূলুল্লাহ (সা) নিজে রোযা রাখলেন এবং মানুষকেও রোযা রাখতে নির্দেশ দিলেন।  (আবু দাউদ, দারেমী- মিশকাত, পৃঃ-১৭৪)
# আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: একজন মরুচারী মহানবী (সা)এর নিকট আসলো এবং বললো, আমি প্রথম চাঁদ অর্থাৎ রমযানের চাঁদ দেখেছি। তখন রসূলুল্লাহ (সা) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি “আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই” একথা সাক্ষ্য দান কর? সে বলল হ্যাঁ, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেন, “মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম আল্লাহর রসূল” তুমি কি একথা সাক্ষ্য দান কর? সে বলল হ্যাঁ, রসূলুল্লাহ (সা) বললেন, হে বেলাল মানুষের কাছে ঘোষণা করে দাও তারা যেন আগামী দিন রোযা রাখে।(আবু দাউদ পৃঃ-৩২০, তিরমিযী পৃঃ-১৪৮, নাসায়ী-২৩১, ইবনু মাজাহ পৃঃ-১১৯, মিশকাত পৃঃ-১৭৪)
# হযরত আবু উমাইর ইবনু আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত যে রসূলুল্লাহ (সা)এর নিকট একদল আরোহী আসল এবং তারা সাক্ষ্য দিল যে তারা গতকাল (শাওয়ালের) চাঁদ দেখেছে। ফলে রসূলুল্লাহ (সা) মানুষকে রোযা ছাড়ার আদেশ দিলেন। পরের দিন প্রাতঃকালে সকলেই ঈদগাহে সমবেত হলেন।(আবু দাউদ, নাসায়ী- মিশকাত-১২৭)
অত্র হাদিসের ব্যাখ্যায় মিশকাত শরীফের উক্ত পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে-
অর্থাৎ তারা ঈদের নামাজের জন্য ঈদগাহে সমাবেত হল। আল্লামা মাজহার বলেন যে ঐ বছর মদীনা শরীফে ২৯শে রমযান দিবাগত রাতে শাওয়ালের চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে মদীনা বাসী ৩০ রমযানের রোযা রেখে ছিলেন। এমতাবস্থায় ঐ দিন দ্বিপ্রহরে একদল ছাওয়ারী দূর থেকে আসল এবং তারা সাক্ষ্য দিল যে, নিশ্চয়ই তারা ২৯ তারিখ দিবাগত রাতে নুতন চাঁদ দেখেছে। অতপর, রসূলুল্লাহ (সা) তাদের এ সংবাদ গ্রহণ করে সকলকে রোযা ভঙ্গের নির্দেশ দিলেন এবং পরের দিন (২রা শাওয়াল) ঈদের নামায পড়ার নির্দেশ দিলেন।
উপরোক্ত সকল হাদিস হতে আমরা যা বুঝতে পারলাম তা হল :
মাস প্রমাণের জন্য সকলের চাঁদ দেখা জরুরী নয় বরং একজন ন্যায়পরায়ণ মুসলিমের দেখাই সকলের আমলের জন্য যথেষ্ট হবে।
নিজ এলাকার আকাশে নুতন চাঁদ দেখতে পাওয়া না গেলে পার্শ্ববর্তী এলাকার সংবাদ গ্রহণযোগ্য ।
পার্শ্ববর্তীদের চাঁদ দেখার সংবাদ পেলে অন্য সকলের উপর আমল জরুরী হবে।
এখন প্রশ্ন হল সারা পৃথিবীতে দেখতে হবে নাকি এলাকা ভিত্তিক দেখতে হবে?
এই প্রশ্ন করার আগে আমার লেখার উপরের প্রথম অংশ আবার পড়ুন যেখানে বলা আছে আমরা চাঁদের কাঠামো অনুষরন করছি, সূর্যের নয়। চাঁদ উঠলেই চাঁদের দিন গননা শুরু হবে, না উঠলে আগের গননায় থাকবেন। যেখানে নতুন মাস আসেনি সেখানে নতুন মাস কিভাবে নিয়ে আসবেন? কথাটাকে একটু সূর্যের রেফারেন্স ফ্রেমে ঘুরিয়ে বলি, সূর্যই উঠে নাই, আপনি দাবী করছেন সকাল হয়ে গেছে। নতুন মাসের চাঁদই উঠে নাই, আপনি দাবী করছেন নতুন মাস শুরু হয়ে গিয়েছে। আসলে এটি ভুল দাবী।এলাকা ভিত্তিক চাঁদ দেখতে হবে সেটার আরেকটা প্রমাণ হল, হাদিস দুটিতে আকাশ মেঘাচ্চন্ন বলে শব্দ ব্যাবহার করা হয়েছে। এবং এই মেঘাচ্ছন্নের জন্য বুখারি শরিফের হাদিসটাতে ৩০ দিন পূর্ন করতে বলা হয়েছে।-এখন বলুন, জীবনে কোথাও শুনেছেন যে সারা পৃথিবীর আকাশ এক সাথে মেঘাচ্ছন্ন থাকে ? আবারো বলি এক সাথে কি সারা পৃথিবীর আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকে এমন কোন প্রমাণ কি আপনার কাছে আছে ? তাহলে আপনি নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করুন। উত্তর পেয়ে যাবেন। আরো প্রমাণ দেখুনঃ
 #কুরাইব তাবেঈ বলেছেন, যে হারিসের কন্যা (লুবা-বা) তাকে শাম প্রদেশে সম্রাট মুআবিয়ার নিকট পাঠিয়ে দিলেন। অতঃপর আমি শামে এসে তাঁর প্রয়োজন সমাপন করলাম এবং আমার শামে থাকা অবস্থায় রামাযানের নতুন চাঁদ উদয় হল এবং আমি বৃহস্পতিবারের দিবাগত সন্ধ্যায় চাঁদ দেখলাম, তারপর মদীনা আসলাম; অতঃপর আমাকে আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) জিজ্ঞেসা করলেন যে, তোমরা (রামাযানের) চাঁদ কবে দেখেছ? আমি বললাম, জুমুআ রাত্রিতে; পুনরায় বললেন যে, তুমি নিজে দেখেছ? আমি বললাম, জি হ্যাঁ এবং অন্যান্য লোকেও দেখেছে এবং মুআবিয়া ও শামবাসীরা রোযা রেখেছেন। ইবনে আব্বাস (রাঃ) বললেন, আমরা কিন্তু শুক্রবারের দিবাগত সন্ধ্যায় চাঁদ দেখেছি, অতএব আমরা রোযা রাখতেই থাকব। ৩০-এ পর্যন্ত কিংবা ৩০শের পূর্বে ২৯শে চাঁদ দেখা পর্যন্ত। আমি বললাম, আপনি কি মুআবিয়ার চাঁদ দেখা ও তাঁর রোযা রাখার উপর নির্ভর করতঃ রোযা ও ঈদ করবেন না? ইবনে আব্বাস (রাঃ) বললেন, না; এটাই আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আদেশ দিয়েছেন ।" [মুসলিম শরিফ খন্ড ৬, হাদিস -২৩৯১]
অর্থাৎ ,আমরা আপন দেশের লোকের চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করব; অন্যান্য দূর দেশবাসীদের চাঁদ দেখাকে আমরা যথেষ্ট মান্য করব না।
এখন আপনি বলবেন রাসূলুল্লাহ (সা) ত ওই ঘোড় সাওয়ারদের কথা শুনেছিলেন । জ্বি ভাই শুনেছিলেন , তাই আমরাও তা পালন করি । বরং ঘোড় সাওয়াড় একরাত নয় ঘোড় সাওয়ারের কয়েকদিনের বেশি দূরত্বের চাঁদ দেখার সংবাদও আমরা গ্রহণ করি আজ । তবে পরের হাদিসে নিশ্চয় দেখতে পেয়েছেন অনেক বেশি দূরের দুই দেশে দুই দিনে চাঁদ দেখা গেলেও সাহাবীরা তা মানেননি ।
তারপরও আমি আরেকটু আগাবো,
ধরুন, হাজার বছর আগে কিছু সাহাবী এবং তাবেয়ীন ভারতে এসেছেন। তারা চাইলেও চাঁদ আরবে দেখা গিয়েছে কিনা তা জানতে পারবেন না। সেহেতু তারা চাঁদ দেখেই ঈদ করেছেন বলা যায়।
ধরুন, রাসূল সাঃ ঐ সময় জীবিত ছিলেন। তাহলে উপরের ঘটনা রাসূল কর্তৃক রেটিফাই কৃত।
বাংলাদেশে আমাদের যত পূর্ব পুরুষ ছিলেন তারা সকলেই চাঁদ দেখে ঈদ করেছেন। তাই তারা একসাথে সকলেই ভুল ছিলেন তা হতে পারে না। যেমন- শাহাজালাল রাঃ, শাহা পরান রাঃ, নাসীর উদ্দোন রাঃ, কুতুবুল আউলিয়া।
মুসলিম বিশ্বে চাঁদ দেখেই ঈদ করে দেখা যায়, সে হিসাবে এটাও একটা দলিল, এবং কোন লিখিত দলিলের চেয়ে দলিলগত শুদ্ধতার বিচাররে বড় রকমের দলিল। কারণ এই দলিল কেউ করাপ্ট করার সুযোগ নেই।
মুসলিম বিশ্বের সকল দেশের ট্রেডিশনের উপর এবং পূর্বের মানুষের উপর ভিত্তি করে যে দলিল তৈরি হয়, সেই দলিল অনুযায়ী আমাদের এলাকা ভিত্তিক চাঁদ দেখতে হবে। এটাও বুখারি শরিফের মত একটি শক্তিশালী দলিল।
এখন প্রশ্ন হল এই চাঁদ নিয়ে কি কোন কেয়ার লেসের ব্যাপার আছে। নাহ নেই, দেখুনঃ
 #নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা রমজান মাসের একদিন বা দুই দিন আগে থেকে রোজা রেখ না। তবে কারও যদি আগে থেকেই কোনো নির্দিষ্ট দিন রোজা রাখার অভ্যাস থাকে এবং ঘটনাক্রমে সে দিনটি ২৯ ও ৩০ শাবান হয় তাহলে সে ওইদিন রোজা রাখতে পারে। (সহিহ বুখারি ১/২৫৬, হাদিস : ১৯১৪)
 #আয়েশা (রা) বলেন, “মুহাম্মাদ (সা) শাবানের মাসের দিন গণনার ক্ষেত্রে অতিশয় সাবধানতা অবলম্বন করতেন এবং তিনি যখনই নতুন চাঁদ দেখতে পেতেন তখন রোযা শুরু করতেন। আর যদি নতুন চাঁদ না দেখতে পেতেন তাহলে শাবান মাসের ত্রিশ দিন পূর্ণ করে রোযা রাখতেন”[আবু দাউদ, হাদীস নং ২৩১৮]
নিচে একটি হাদিস দিলাম, যা থেকে ভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, হাদিসটি হলঃ
#“ঐ দিন রোযা আরম্ভ হবে যেদিন সকলে রোযা রাখবে, রোযা ভাঙ্গতে হবে ঐ দিন যেদিন সবাই রোযা ভাঙ্গে আর কুরবানি করতে হবে ঐ দিন যে দিন সকলে কুরবানী করে”[তিরমিযী, হাদীস নং ৬৯৭]
এই হাদিস কি উপরের হাদিস গুলির কন্ট্রাডিকশনে যায়? যায় না। কারণ এলাকা ভিত্তিক হলে সবাই একই সাথে রোযা রাখবে, রোযা ভঙ্গ করবে। হাদিসটি ভাল করে লক্ষ্য করলে দেখবেন হাদিসের পিছনে একটি ঘটনা আছে, যা আমার অজানা। (হাদিস বিশেষজ্ঞ কেউ হয়ত জেনে থাকবেন)ঐ অজানা ঘটনার ভিত্তিতে আপনি সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন। বরং এই হাদিস সবার ঐক্যমত করার অর্থই প্রকাশ করে। কিন্তু আমার উপরে দেওয়া আল কুরানের আয়াতের ভিত্তিতে দেখলে বুঝতে পারবেন, দিন বলতে চাঁদের হিসাবে যে দিন সেই দিনই বলা হয়েছে। এবং সেই দিন সারা পৃথিবীতে একই থাকে, কিন্তু সূর্যের হিসাবে ভিন্ন হয়।
স্পেশাল কিছু ক্ষেত্রে উপরের হাদিসের সহযোগিতা নিতে পারেন, এমন কোথাও থাকেন যে চাঁদ দেখার মত ক্ষমতা নেই কিংবা এত মানুষ নেই, সে জন্য চাঁদ না দেখে অন্য কোন দেশের সাহিক ঐক্যমতের ভিত্তিতে কিছু করলেন। এটা হচ্ছে আইনের ব্যাতীক্রম।এলাকা ভিত্তিক রোজা করার আরেকটি প্রমাণ হল নামাজ। আমরা এলাকা ভিত্তিকই নামাজ পড়ি, সারা পৃথিবী একসাথে নয়। এবং দেখুন এটা এলাকা ভিত্তিক না হলে কিভাবে মানবেন, সব এলাকায় একই সাথে সকাল হয় না।
• “আর পানাহার কর যতক্ষণ না কাল রেখা থেকে ভোরের শুভ্র রেখা পরিষ্কার দেখা যায়। অতঃপর রোযা পূর্ণ কর রাত পর্যন্ত” [বাকারাঃ ১৮৭]
নোটেড পয়েন্ট এটা রোজার রাখার নিয়ম, তারিখ গননার নিয়ম উপরের আয়াতে বর্নিত আছে।
শেষমেষ কিছু প্রশ্নঃ
এমন কোন হাদিস আছে কি যাতে বলা হয়েছে সৌদি আরবকে দেখে রোজা এবং ঈদ করতে হবে ?
এমন কোন প্রমান আছে যেখানে রাসূল সাঃ এস্ট্রলজিস্টদের কিংবা প্রাচীন কোন দূরবিক্ষন যন্ত্রের সহযোগিতা নিয়ে ঈদ করেছেন ? এখানে বিবেচ্য যে যারা পিরামিড বানিয়ে ছিল, তারাও জ্যাতীবিদ্যা সম্পর্কে জ্ঞান রাখত। রাসূল সাঃ একজন ঐ রকম এস্ট্রলজিস্ট কিংবা দুরবীন জাতীয় কিছু প্রাচীন যন্ত্র যোগার করিতে পারার ক্ষমতা খুব সম্ভবত রাখতেন।
কোন সাহাবী কিংবা তাবেয়ীন, আরবের বাহিরে থেকে মক্কায় যখন ঈদ সেই খবর কোন ক্রমে যেনে সে অনুযায়ী ঈদ করেছেন কি না ?
আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা একটি কৃত্রিম জিনিস। দেখা যায় যদি সারা পৃথিবীতে সূর্যের হিসাবে একই সাথে ঈদ করে, তাহলে যখন হাওয়াইয়ের মানুষ যে দিন ঈদ করছে, ফিজির মানুষ তার আগের দিন ঈদ করবে। কারণ, হাওয়াইয়ে যখন সোমবার, ফিজিতে তখন মংগলবার। তাইলে একসাথে ঈদ কিভাবে সম্ভব ? হাওয়াইয়ের আকাশে যে সূর্য একই সূর্য একই সময় ফিজিতে কিন্তু ফিজি একদিন আগে নিজেদের ধরে আর হাওয়াই একদিন পরে ধরে।-ক্যাথলিকদের ক্রিসমাস আর অর্থডক্সদের ক্রিসমাস একই সাথে হয় না। জানেন তো কেন ?
বাস্তবে একসাথে রমজান শুরুর কিছূ প্রাকটিকাল সমস্যা :
এখন সৌদি আরবে মাগরিব তথা সূর্যাস্তের সময় সন্ধ্যা ৭টায় । উক্ত সময়ে বাংলাদেশে বাজে রাত ১০টা। ঐ একই সময়ে অস্ট্রেলিয়াতে বাজে রাত ২ টা। উক্ত সময়ে ফিজি, মার্শাল আইল্যান্ড এ বাজে ভোর ৪টা।
আমরা জানি যে সৌদি সরকার সূর্যাস্তের সাথে সাথেই চাঁদ দেখার খবর ঘোষণা করেনা বরং তারা মাগরিবের পর চাঁদ দেখে বা চাঁদ দেখার খবর সংগ্রহ করার চেষ্টা করে এবং তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে চাঁদ দেখার সংবাদ বা খবর ঘোষণা করতে সূর্যাস্তের পর দুই থেকে তিন ঘন্টা সময় লেগে থাকে।
আমরা যদি ধরে নিই যে সৌদি সরকারের চাঁদ দেখার খবর ঘোষণা করতে দুই ঘন্টা সময় লাগে তাহলে আজ ২০১৩ তারিখে তাদের চাঁদ দেখার খবর তারা রাত ৭+২ = রাত ৯ টায় ঘোষণা করবে। এই খবর বাংলাদেশে যদি সাথে সাথেও পৌঁছায় তাহলেও তখন বাংলাদেশের সময় হবে রাত ১২টা। কেননা বাংলাদেশের সময় সৌদি থেকে +৩ ঘন্টা বেশী তথা এগিয়ে। এই বছর রমাযানে সৌদি আরবের চাঁদ দেখার খবর বাংলাদেশে পৌছায় বাংলাদেশ সময় রাত ১২ টায়।
উক্ত সময়ে অস্ট্রেলিয়াতে বাজে ভোর ৪টা ৫ মিনিট। অস্ট্রেলিয়া সৌদি থেকে +৭ ঘন্টা এগিয়ে।
উক্ত সময়ে ফিজি/অক্ল্যান্ড/অয়েলিংটন/মার্শাল আইল্যান্ড এ বাজে সকাল ৬টা। এরা সৌদি থেকে +৯ ঘন্টা এগিয়ে।
আর উক্ত দিনে ফিজি/মার্শাল আইল্যান্ড এ ফযর শুরু তথা সেহেরীর শেষ সময় যথাক্রমে ৫টা ২২ ও ৫টা ১১ মিনিটে। অর্থাৎ তাদের কাছে সৌদি আরবের রমাযান মাস শুরুর খবর পৌঁছবে সেহেরীর শেষ সময়েরও প্রায় এক ঘন্টা পর। অর্থাৎ ঐসব দেশে বসবাসকারী মুসলিমদের প্রতিবছরই সেহেরী না খেয়ে, তারাবীহ না পড়েই রমাযান মাসের প্রথম দিন শুরু করতে হবে।
আর মক্কার ঠিক উল্টো পাশের স্থানটিতে মক্কায় সন্ধ্যা শুরুর সাথে সাথে দিন শুরু হয় । তারাই বা কি করবে ? তারা কি অর্ধেক দিন পার করার পর রোজা রাখা শুরু করবে ?
যদি সারা বিশ্বে একই চাঁদ দেখার খবরের ভিত্তিতে রমাযান মাস শুরু করতে হয়, তাহলে প্রতিবছর একই রমাযান মাস কোন কোন দেশের মুসলিমরা আরামের সাথে চাঁদ দেখে ধীরেসুস্থে তারাবীহ পড়ে, স্বাভাবিকভাবে ঘুমিয়ে উঠে সেহেরী খেয়ে রোযা শুরু করবে। আর উক্ত রমাযান মাসই বিশ্বের অন্য প্রান্তের মুসলিমগন একই চাঁদের সাক্ষ্য বা খবর গ্রহন করার কারনে প্রতিবছর তারাবীহ না পড়ে, সেহেরী না খেয়ে অভুক্ত অবস্থায় শুরু করবে।
একই বিশ্বে একই আমল করতে যেয়ে মুসলিমদের একাংশকে এধরনের অমানবিক, বৈষম্যমূলক ও কঠিন পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেয়ার দায়ভার কে বহন করবে। প্রতিবছর একদল মুসলিম তাদের রমাযান মাস এবং প্রথম রোযা শুরু করবে তারাবীহ না পড়ে, সেহেরী না খেয়ে অভুক্ত থেকে এবং রমাযানের প্রথম রাত্রির বরকত থেকে বঞ্চিত অবস্থায়। এটা কি স্বাভাবিকভাবে গ্রহনযোগ্যতা পাবে? এর মানবিক ও বাস্তব সমাধান না করা হলে সারা বিশ্বে একই দিনে ও একই চাঁদের ভিত্তিতে রোযা ও ঈদ করার ধারণা কতটুকু গ্রহনযোগ্যতা পাবে তা প্রশ্নসাপেক্ষ।
বিঃ দ্রঃ
সৌদি আরব থেকে যারা +৩/৪ ঘন্টা থেকে +৬/৭ ঘন্টা দূরে তাদের সৌদি আরবের চাঁদের খবর বা সাক্ষ্য পাবার জন্য রাত ১২ টা থেকে ভোর ৪টা/৫টা পর্যন্তও জেগে থাকতে হতে পারে। চাঁদ দেখার সাক্ষ্য বা খবর পাবার জন্য এভাবে জেগে থাকার কোন দলীল পাওয়া যাবে কি? আর যদি তারা তাদের বিতরের নামায না পড়ে তারাবীহের পরে পড়বে ভেবে জেগে না থেকে ঘুমিয়ে পরে এবং সৌদিতে চাঁদ না ওঠায় তাদের কাছে কেউ চাঁদ দেখার খবর না পৌঁছায় তাহলে তাদের বিতরের নামাযের সাথে সাথে ফযরের নামাযও ছুটে যাবার আশঙ্কা থাকে। আর যাদের কাছে চাঁদ দেখার খবর সেহেরীর শেষ সময়ের এক/আধ ঘন্টা আগে পৌঁছবে, তারা তারাবীহ পড়বে না সেহেরী খাবার প্রস্তুতি নেবে এ নিয়ে বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে।
ধরা যাকঃ
জাপানের কোন মুসলিম সৌদির রাত ৯ টার চাঁদের খবর গ্রহন করার জন্য তাদের সময়ের রাত ৩টা পর্যন্ত জেগে থাকলো। (জাপানের সাথে সৌদির সময়ের পার্থক্য +৬ ঘন্টা) কিন্তু কোন কারনে সেদিন সৌদিতে চাঁদ দেখা গেলনা, এই খবর সে রাত ৩টা জানতে পেরে তার বিতরের নামায পড়ে ঘুমাতে গেল। এ অবস্থায় তার ফযরের নামায কাযা হবার ব্যপক আশংকা থেকে যাবে। আর পরবর্তী দিন যদি তার অফিস থাকে তাহলে সেখানেও তার দেরীতে পৌঁছা ও কর্মদক্ষতা কমে যাবার আশংকা থেকে যায়।
প্রশ্নঃসারা বিশ্বে একসাথে রোযা ও ঈদ পালনকারীদের কাছে প্রশ্ন, যেসব দেশের মুসলিমদের চাঁদের খবরের জন্য রাত ৩টা/৪টা কিংবা ভোর ৫টা পর্যন্ত জেগে থাকতে হবে তারা কি এই সময় পর্যন্ত জেগে থাকবে নাকি ঘুমিয়ে পরবে? যদি ঘুমিয়ে পড়তে বলা হয় তাহলে তারা চাঁদ দেখার খবর বা সাক্ষ্য কখন, কিভাবে গ্রহন করবে?
একটু ভেবে দেখিঃ
যারা সারা বিশ্বে একসাথে রোযা ও ঈদ পালন করার পক্ষপাতী, যদি তাদেরকে ঐসব দেশের মুসলিমদের মত না খেয়ে, না তারাবীহ পড়ে এবং রমাযানের প্রথম রাতের বরকত থেকে বঞ্চিত থেকে রোযা শুরু করতে হতো কিংবা যদি রাত ৩টা/৪টা বা ভোর ৫টা পর্যন্ত চাঁদের খবরের জন্য জেগে থেকে অপেক্ষা করতে হতো তখন সারা বিশ্বে একসাথে রোযা ও ঈদ করার পক্ষে তাদের এই দৃঢ় অবস্থান কতটুকু বজায় থাকতো। তারা নিজের বিবেককেই এই প্রশ্নটা করুন।
প্রেক্ষাপট বাংলাদেশঃ
বাংলাদেশে যারা শহরে বাস করেন তারা হয়তো রাত ১১টা ১২টা পর্যন্ত জেগে থাকেন কিন্তু যারা গ্রামাঞ্চলে বাস করেন তারা রাত নামার পর অতি দ্রুত এশার নামায ও খাওয়া সেরে ঘুমিয়ে পরেন। আর চাঁদ দেখার খবরের অপেক্ষায় গ্রামাঞ্চলের মানুষদের রাত ১২টা ১টা পর্যন্ত জেগে থাকতে বলা কতটুকু গ্রহণযোগ্য হবে তা প্রশ্নের অবকাশ রাখে। তার ওপর রয়েছে রোযা শুরু হলে তারাবীহ নামায ও সেহেরীর প্রস্তুতি, আর রোযা শুরু না হলে রয়েছে বিতরের নামায এবং ফযরের নামায ছুটে যাবার আশংকা।
সারা বিশ্বে একসাথে রোযা ও ঈদ শুরু করার আগে এ সমস্যাগুলোর মানবিক, বাস্তব ও গ্রহণযোগ্য সমাধান অত্যন্ত জরুরী।
জ্ঞাতব্যঃ
সৌদি আরব ও এর প্রতিবেশী দেশগুলো এবং সৌদি থেকে পশ্চিমে অবস্থিত দেশগুলোর জন্য সৌদির চাঁদ দেখার সাক্ষ্য সহজে গ্রহণযোগ্য। কেননা তাদের অবস্থান সৌদির থেকে - (মাইনাস) সময়ে। যেমন ইংল্যান্ডে যখন সৌদির রাত ৯টার চাঁদ দেখার খবর পৌঁছবে তখন তাদের সময় হবে মাত্র সন্ধ্যা ৬টা। (সৌদির সাথে ইংল্যান্ডের  সময়ের পার্থক্য -৩ ঘন্টা) এজন্যই সৌদি আরব থেকে পশ্চিমে অবস্থিত দেশগুলো সৌদির চাঁদ দেখার খবর বা সাক্ষ্য সহজেই গ্রহন করতে পারবে। কিন্তু সৌদি থেকে পূর্ব দিকে অবস্থিত দেশগুলোর ক্ষেত্রে সৌদির সাথে তাদের + (প্লাস) সময়ের পার্থক্য যতই বেশী হবে, তাদের জন্য সৌদির চাঁদের সাক্ষ্য গ্রহন করে আমল করা ততই কঠিন, অমানবিক এবং অবাস্তব হয়ে উঠবে।
মহান আল্লাহ্‌ পবিত্র কুরআনে বলেছেনঃ
 • ত্বা-হা । তোমাকে কষ্ট দেওয়ার জন্য আমি তোমার প্রতি কুরআন অবতীর্ন করিনি। (সুরা ত্বাহা: ১-২)
 • আল্লাহ তাআলা তোমাদের জন্য সহজ করতে চান, তোমাদের জন্য কঠিনতা তাঁর কাম্য নয়। (সুরা বাক্বারাহ: ১৮৫)
 রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহীহ হাদীসে রয়েছেঃ
 # ইবনে মাসউদ (রা:) হতে বর্নিত, নবী (সা:) বলেন, “দ্বীনের ব্যাপারে নিজের পক্ষ থেকে কঠোরতা অবলম্বনকারীরা ধ্বংস হয়ে গেল।(অথবা ধ্বংস হোক।)” এ কথা তিনি তিনবার বললেন।(মুসলিম ২৬০৭, আবু দাউদ ৪৬০৮, আহমাদ ৩৬৪৭)
 # আবূ হুরাইরাহ (রা:) হতে বর্নিত, নবী (সা:) বলেন, “নিশ্চয় দ্বীন সহজ। যে ব্যক্তি অহেতুক দ্বীনকে কঠিন বানাবে, তার উপর দ্বীন জয়ী হয়ে যাবে। (অর্থাৎ মানুষ পরাজিত হয়ে আমল ছেড়ে দিবে।) সুতরাং তোমরা সোজা পথে থাক এবং (ইবাদতে) মধ্যমপন্থা অবলম্বন কর।(সহীহুল বুখারী ৩৯, ৫৬৭৩, ৬৪৬৩, মুসলিম ২৮১৬, নাসয়ী ৫০৩৪, ইবনু মাজাহ ৪২০১, আহমাদ ৭১৬২, ৭৪৩০, ৭৫৩৩, ২৭৪৭০)
আর তাই সারা বিশ্বে একসাথে রোযা ও ঈদ উদযাপনকারী ব্যক্তিরা তাদের নিজেদের অজান্তে বিশ্বের মুসলিমদের ওপর কি এক ভয়াবহ কঠিন, অমানবিক এবং বৈষম্যমূলক ইবাদতের বোঝা চাপিয়ে দেবার চেষ্টা করছেন, তারা একবার ভেবে দেখবেন কি?
শেষকথা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় অনৈক্যের বীজ ঐক্যের নামেই রোপন করা হয়। এতদিন যাবত রমযান, ঈদ এসব নিয়ে কোন সমস্যা ছিল না। সারা পৃথিবীতে এক সময়ে ঈদ না হলেও একই অঞ্চলে একই সময়ে ঈদ হতো। এখন হঠাৎ করে ঐক্যের নামে নতুন একটা মতবাদ দাঁড় করিয়ে দেখা যাচ্ছে একই এলাকার লোকজন ভিন্ন ভিন্ন দিনে ঈদ করছে!! এই হচ্ছে ঐক্যের নমুনা!-আল্লাহ পাকই সব থেকে ভাল জানেন। তিনি আমাদের ক্ষমা করুন। আমিন।
মহান আল্লাহ্‌ আমাদেরকে ইসলামের সঠিক বুঝ দান করুন। আমীন!
বিষয়টি নিজে জানুন অন্যকে জানাতে চেষ্টা করুন।

No comments:

Post a Comment